• Home
  • Terms & Privacy
  • About
  • Contact
Tuesday, June 6, 2023
সমতল
Advertisement
No Result
View All Result
  • Home
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • প্রতারণা ও দুর্নীতি
  • মতামত
  • সাংবাদিকতা
  • আমার অধিকার
  • সকল গণমাধ্যম
  • App
  • সংবাদ দিন
No Result
View All Result
সমতল
No Result
View All Result
Home বাংলাদেশ

আমরা সবাই অপেক্ষা করছি পরিবর্তনের জন্য : মির্জা ফখরুল

11/05/2023
Reading Time: 3min read
A A


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা সবাই অপেক্ষা করছি পরিবর্তনের জন্য। অপেক্ষা করছি সত্যি করে অর্থে এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করা তার জন্য।
আজ বৃহস্পতিবার গুলশানের একটি রাজনৈতিক দলের ঈদ আড্ডা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব: সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক এর সভাপতিত্বে ও দলটির যুগ্ম মহাসচিব আবদুল্লাহ আল হাসান সাকীবের সঞ্চালনায় গুলশানের ১ এর একটি পার্টি সেন্টারে ‘ ঈদ আড্ডা ‘ র আয়োজন করা হয়।
 
মির্জা ফখরুল বলেন, এই ঈদ আড্ডা অনুষ্ঠানের মধ্য জাতির মনে আশা তৈরি হলো। এখানে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জেনারেল মুহাম্মদ ইবরাহিমের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। একসাথে আড্ডা দিতে এসেছেন। এই আড্ডা সব দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আড্ডা মনকে প্রফুল্ল উৎসাহিত করে। এখানে রাজনৈতিক আড্ডা হচ্ছে। আশা করি আড্ডাটা নতুন করে আশা তৈরি করবে। আমরা সবাই অপেক্ষা করছি পরিবর্তনের জন্য। অপেক্ষা করছি সত্যি করে অর্থে এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করা তার জন্য।
তিনি বলেন, যিনি গণতন্ত্রের জন্য সবসময় আন্দোলন করেছেন সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাগারে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে নির্বাসিত। লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সত্যিকার অর্থেই আমরা একটি গণতান্ত্রিক সমাজ, সভ্য সমাজ, মানবিক, ন্যায় বিচারের সমাজ প্রতিষ্ঠিত করবো। আসুন আজকের এই ঈদ আড্ডা সেই দিকে নিয়ে যাই। এ আড্ডার মধ্য দিয়ে মানুষের মাঝে আশা জাগাই।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, রাজনৈতিক নেতারা কারো প্রতিপক্ষ নন, একে অপরের যেন শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা একে অপরের প্রতি সহনশীল হতে হবে। সামাজিক ভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। তাহলে দেশের রাজনীতিতে আগামীতে সুবাতাস বইবে। আমরা দেশের রাজনীতিতে কাজ করে যাচ্ছি, কাজ করে যেতে চাই।
কল্যাণ পার্টি ঈদ আড্ডা অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাপার চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাগপার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান, এনপিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসীন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, জাগপার চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ মাইনরিটি পার্টির চেয়ারম্যান সুকৃতি মন্ডল, বিকল্পধারার চেয়ারম্যান ড নুরুল বেপারী, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, সাংবাদিক নেতা কবি আব্দুল হাই শিকদার, কাদের গণি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, সরদার ফরিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাতের ভোজের মাধ্যমে এ ঈদ আড্ডা অনুষ্ঠানের শেষ হয়।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
আমেরিকায় অভিবাসন আইন ও মানুষের ভোগান্তি
ট্রাম্প শাসনামলের বিতর্কিত অভিবাসন আইন ‘টাইটেল ফর্টি টুর’ মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ ১১ মে। তিন বছরের বেশি চালু থাকার পর মার্কিন অভিবাসন নীতিতে নাটকীয় একটি বদল ঘটতে চলেছে এ আইনের মেয়াদ শেষ হবার মধ্যে দিয়ে।
বহুল সমালোচিত এ আইন উঠে যাবার মুহূর্তে আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে অভিবাসীদের ঢল নামবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সীমান্তে কর্মকর্তারা বলছেন তাদের ধারণা আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আইন বদলানোর পর প্রতিদিন ১০ হাজার করে অভিবাসীর ঢল নামবে সীমান্তে।
আমেরিকার দক্ষিণ সীমান্তে কড়া রোদের মধ্যে শুকনো বালুর বিরান ভূমিতে এখনই শত শত মানুষ শুধু এই আইন উঠে যাবার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন।
মঙ্গলবারই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বীকার করেছেন, ‘কিছু সময়ের জন্য সেখানে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।’ কারণ মেক্সিকো থেকে আমেরিকায় ঢোকার জন্য বহু মানুষের অপেক্ষা ধৈর্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে।
অভিবাসন কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে চালু হওয়া এ আইনের কড়া সমালোচনা করেছেন এবং কিছু কিছু ডেমোক্র্যাট সদস্য বলেছেন এ নীতির কারণে বহু আশ্রয়প্রার্থী আমেরিকায় ঢুকতে পারছেন না।
অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা এখনো যুক্তি দেখাচ্ছেন বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হওয়া রুখতে এ আইনের প্রয়োগ এখনো বলবৎ রাখা উচিত। সীমান্তে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য তারা দুষছেন খোদ প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে।
ফলে, ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে অভিবাসন ইস্যুতে এ আইন ক্রমশই তীব্র একটা বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠছে।
ভাগ্য ফেরাতে সীমান্তে মানুষের ঢলক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত, ক্লান্ত ও ভীত শত শত মানুষ এ মুহূর্তে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছে দু‘দেশের মাঝখানে বিশালাকৃতি ইস্পাতের সীমান্ত বেড়ার পাশে জানাচ্ছেন মেক্সিকোর সিউদাদ হুয়ারেজ থেকে বিবিসির উত্তর আমেরিকা সংবাদদাতা সারা স্মিথ।
যে দেশে পৌঁছানোর জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করে এসেছেন, সেই দেশ তারা দেখতে পাচ্ছেন বেড়ার ফাঁক দিয়ে। কিন্তু এদের কেউই জানেন না তাদের শেষ অবধি ওই বেড়া পার হতে দেয়া হবে কিনা।
রোজারিও মেডিনা সারা স্মিথকে জানালেন আবর্জনার স্তুপ ঘেঁটে তিনি তার নাতিনাতনিদের জন্য খাবার জোগাড় করছেন। শিশুদের বোতলে খাওয়ানোর পানি আনছেন দূষিত রিও গ্র্যান্ডে নদী থেকে।
গত আট দিন ধরে সীমান্তে বসে আছেন তিনি। তাদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে তার চোখ উপছে পানি গড়িয়ে পড়ল। সূর্যের প্রচণ্ড তাপে বাচ্চাদের ঠোঁটে ফোস্কা পড়ে গেছে।
প্রথমে পায়ে হেঁটে দুর্গন্ধময় নদী পার হয়ে, তারপর ধুলাবালির মধ্যে ধারালো ছুরির ফলা বসানো তারের বেড়ার ছোট্ট এক ফাঁক গলে অন্য পাশে পৌঁছে মিজ স্মিথ শোনেন এসব অভিবাসন প্রত্যাশীদের যাত্রাপথের ভয়াবহ কাহিনি।
মিলেক্সি গোমেজ তাকে জানান তিনি এসেছেন ভেনেজুয়েলা থেকে। গহীন ও অজানা অরণ্যের মধ্যে দিয়ে চার সন্তানকে নিয়ে পায়ে হেঁটে পথ পাড়ি দিয়েছেন। তাদের কোলে নিয়ে পার হয়েছেন খাড়া পাহাড়, ট্রেনের টিকিট কেনার সামর্থ্য না থাকায় তাদের নিয়ে লাফ দিয়ে চড়েছেন ট্রেনের ছাদে। এখন ধুলাকাদার মধ্যে ঘুমাচ্ছেন তারা সবাই। তার দু‘যমজ ছেলের সর্দিজ্বর ব্রঙ্কাইটিসে রূপ নিতে পারে বলে তার আশঙ্কা।
তিনি বলেন,‘আমরা মারাত্মক কষ্টের মধ্যে কাটাচ্ছি।’ ‘রাতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় ঘুমাতে পারি না, খাবার পয়সা নেই, ধোয়ামোছার কোনো ব্যবস্থা নেই। বারবার ঈশ্বরকে ডাকছি, বাচ্চাদের এখানে কীভাবে বাঁচিয়ে রাখব!’
ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তির বেড়াজালবিবিসি সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, সীমান্তের এ দৃশ্য খুবই বিরল। আমেরিকায় অভিবাসন প্রত্যাশীদের সাধারণত রাখা হয় হুয়ারেজ শহরের আশ্রয়কেন্দ্রে। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েকদিনে সীমান্তে যে পরিমাণ মানুষ জড়ো হয়েছেন তা ব্যাপক। এ ঢল সামলাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন।
এত মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া অসম্ভব বলে তারা বলছেন। কয়েক দশক ধরে সীমান্তে কাজ করছেন এমন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এ ধরনের দৃশ্য তারা কখনো দেখেননি।
সেখানে জড়ো হওয়া অধিকাংশ মানুষ বলেছেন এ সপ্তাহে আমেরিকায় ঢোকার আইন বদলাচ্ছে এমনটা তারা শুনেছেন। কিন্তু অভিবাসীদের জন্য এ পরিবর্তনের অর্থ কী তা নিয়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে ভুয়া খবর এবং তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।
অনেকেরই ধারণা কোভিডের সময় চালু হওয়া ‘টাইটেল ফর্টি টু’ যার আওতায় অভিবাসন প্রত্যাশীদের সহজেই তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর সুযোগ ছিল। তা উঠে গেলেই আমেরিকায় ঢোকার পথ সহজ হবে।
আর ওই কারণেই দলে দলে এত মানুষ সীমান্তে এসে ভিড় জমিয়েছেন।
অনেকে আবার শুনেছেন আমেরিকায় ঢুকতে হলে ১১ মে মধ্যরাতের আগে সীমান্তে পৌঁছাতে হবে। যেমনটা শুনেছেন মিলেক্সি। ১১ মে মাঝরাতের আগে সীমান্তে লাইন দিতে না পারলে আমেরিকায় ঢোকার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হবে। তিনি বলেছেন বিবিসিকে।
তাই উদ্বেগে, আশঙ্কায় সীমান্তে বাচ্চাদের নিয়ে কঠিন সময় পার করছেন তিনি এবং তার মত শত শত অভিবাসন প্রত্যাশী।
টাইটেল ফর্টি টু কী এবং কেন তা উঠে যাচ্ছে?টাইটেল ফর্টি টু প্রথম চালু হয় ১৯৪৪ সালে তখন এ আইনের নাম ছিল জন স্বাস্থ্য আইন। রোগব্যাধির বিস্তার রোধ করতে আমেরিকান কর্তৃপক্ষকে এ আইন ব্যবহারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল।
আমেরিকার অভিবাসন নীতিতে এ আইনের প্রয়োগ নতুন করে আবার সামনে আসে ২০২০ সালের মার্চ মাসে। সীমান্ত দিয়ে কোভিডের বিস্তার ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসন এ আইনের প্রয়োগ অনুমোদন করে।
মেক্সিকো থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আমেরিকায় ঢুকতে চাওয়া মানুষ, এমনকী মানবিক কারণে যারা আমেরিকায় আশ্রয়প্রার্থী তাদেরও প্যানডেমিকের যুক্তি দেখিয়ে এই আইনের বলে মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাদের সোজা মেক্সিকোয় ফেরত পাঠিয়ে দেয়।
এরপর ২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং তার প্রশাসন জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবেলার যুক্তি দিয়ে এ নীতি বজায় রাখেন আরো এক বছরের ওপর।
আমেরিকার শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা দফতরের তথ্য অনুযায়ী ২০২১-২২ অর্থ বছরে টাইটেল ফর্টি টু নীতিমালা ব্যবহার করে ২০ লাখের ওপর মানুষকে সীমান্ত থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
আমেরিকার স্বাস্থ্য নীতি নির্ধারক সংস্থা ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ২০২২ এর এপ্রিল মাসে যুক্তি দেয়, জন স্বাস্থ্য ঝুঁকি যেহেতু কমে গেছে তাই এ নীতি এখন তুলে নেয়া যাবে।
তবে রিপাবলিকান পার্টি নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্যগুলো এ আইনবিধি চালু রাখার পক্ষে আইনি চ্যালেঞ্জ জানানোর কারণে টাইটেল ফর্টি টু-র তুলে নেবার প্রক্রিয়ায় বিলম্ব ঘটে।
এখন কেন্দ্রীয়ভাবে ১১ মে তারিখ থেকে কোভিড সংক্রান্ত সব পদক্ষেপের যেহেতু অবসান হচ্ছে, তাই কর্মকর্তারা জানান এরই সাথে সঙ্গতি রেখে টাইটেল ফর্টি টু-ও তুলে নেয়া হবে।
টাইটেল ফর্টি টু তুলে নেয়ার অর্থ কী?প্রথমত আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্ত পার হবার জন্য সেখানে যে অপ্রত্যাশিত সংখ্যায় মানুষের ঢল নামবে তার মধ্যে থেকে কারা আইনত অভিবাসনের জন্য আবেদনের যোগ্য সেটা হয়ে দাঁড়াবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন তাদের ধারণা সীমান্তে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি অভিবাসন প্রত্যাশী ভিড় জমাবেন।
টাইটেল ফর্টি টুর অধীনে বহু অভিবাসীকে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করার অনুমতিই দেয়া হয়নি। কিন্তু এ ধারা উঠে যাবার পর আমেরিকার পুরনো অভিবাসন নীতি অনুযায়ী আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন যাচাই বাছাই করে দেখা হবে এবং তাদের ফেরত পাঠানো যাবে একমাত্র যদি প্রমাণিত হয় তারা আবেদনের যোগ্য নন।
আমেরিকা অভিবাসন প্রক্রিয়ায় নতুন যেসব পদক্ষেপ চালু করেছে তাতে আশ্রয়প্রার্থীদের ‘দ্রুত’ সাক্ষাৎকার নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের আবেদন যাচাইবাছাই করার কথা বলা হয়েছে এবং তারা যোগ্য বিবেচিত না হলে কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর নীতি চালু করা হয়েছে।
বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হতে গিয়ে কেউ ধরা পড়লে অন্তত ৫ বছর তার আমেরিকায় ঢোকা নিষিদ্ধ করা হবে। এবং সে ‘আশ্রয়প্রার্থী হিসাবে অযোগ্য বিবেচিত’ হবে।
অবৈধ পথে সীমান্ত পার হতে অভিবাসীদের নিরুৎসাহিত করতে বাইডেন প্রশাসন বৈধ অভিবাসনের বেশ কিছু পথ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।
দোসরা মে ঘোষণা করা এক চুক্তির অংশ হিসেবে মেক্সিকো কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া আর ভেনেজুয়েলা থেকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার অভিবাসী গ্রহণ অব্যাহত রাখতে রাজি হয়েছে। এ চারটি দেশ থেকেই অবৈধভাবে সীমান্ত পার হবার বেশি ঘটনা ঘটে।
আমেরিকা এ চুক্তিতে হন্ডুরাস, গুয়াতেমালা আর এল সালভাডোর থেকে মোট ১ লাখ অভিবাসী নিতে সম্মত হয়েছে। এসব দেশের মানুষের অনেকের আত্মীয়স্বজন থাকেন আমেরিকায়।
অভিবাসীদের অবৈধভাবে সীমান্ত পার করতে যেসব অপরাধী চক্র বা দালালরা কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে আমেরিকা। ভুয়া ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর বন্ধেও তারা পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে।
সূত্র : বিবিসি
অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঢল সামাল দিতে আমেরিকা প্রস্তুত কিনা- এ প্রশ্নের উত্তরে মি. বাইডেন বলেছেন, “কিছুদিন বিশৃঙ্খলা চলবে, তবে আমরা সর্বতোভাবে চেষ্টা করছি।”
হাউসে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা স্টিভ স্ক্যালিস বলেছেন সীমান্তে বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী মি. বাইডেন। “মি. বাইডেন এমন বার্তা দিয়েছেন যে আমেরিকার বর্ডার উন্মুক্ত। তার সেই বক্তব্যে সাড়া দিয়ে লাখ লাখ মানুষ অবৈধভাবে সীমান্তে ছুটে আসছে।”
কিন্তু বাইডেন প্রশাসন বলছেন বৈধ পথে আশ্রয় চাওয়ার প্রক্রিয়া আরও নিরাপদ ও সহজ করার জন্য তারা উদ্যোগ নিচ্ছেন।
অনিশ্চিত অপেক্ষা
বিবিসির সংবাদদাতা সারা স্মিথকে সীমান্তে অপেক্ষমান রোজারিও মেডিনা জানান তিনি তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গত অক্টোবরে যখন গুয়াতেমালা থেকে আমেরিকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান তখন এসব আইনি পরিবর্তনের খবর তিনি জানতেন না।
এখন তিনি উদ্বিগ্ন আমেরিকায় তাদের ঢোকা হয়ত কঠিন হবে। গুয়াতেমালায় গুণ্ডাদলের হাতে হত্যা, ধর্ষণ আর অপহরণ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। সেই পরিবেশে তার তরুণী কন্যা ও নাতিনাতনিদের নিয়ে নিরাপদে বাস করা কঠিন।
আমেরিকার নতুন অভিবাসন আইনে তার আবেদন একমাত্র গ্রহণযোগ্য হবে তিনি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে সেখানে তার পরিবারের জীবন “এই মুহূর্তে চরম ঝুঁকির মুখে”। এরপর দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় ১০০টির মধ্যে যে কোন একটি কেন্দ্রে সাক্ষাৎকার দেবার জন্য তাকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে হবে। এসব কেন্দ্র এখনও তৈরিই হয়নি।
ডিকার মাতানো এই ধূধূ নো ম্যান্স ল্যান্ডে স্ত্রী, ছেলে, এবং গুরুতর ভাইকে নিয়ে পড়ে আছেন এক সপ্তাহের ওপর। প্রচণ্ড রোদের তাপ আটকাতে সোয়েটারে মাথা মুড়ে বিবিসির সংবাদদাতাকে তিনি বলছিলেন তার দৃঢ় বিশ্বাস ১২ই মের আগে কেউ আমেরিকায় ঢুকতে পারলে তাকে বৈধভাবে ফেরত পাঠানো যাবে না। সেকারণেই তিনি মাটি কামড়ে সেখানে পড়ে আছেন।
তার অর্থ ফুরিয়ে গেছে। খাবারের জন্য ভিক্ষা করছেন তিনি। “লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে আমার। ভিক্ষা বা উঞ্ছবৃত্তির আমি ঘোর বিরোধী। আমি খেটে খেতে চাই,” তিনি বলেন।
তিনি এসেছেন ভেনেজুয়েলা থেকে কারণ সেখানে পরিবারকে খাওয়ানোর মত উপার্জনের রাস্তা তার নেই।
কিন্তু মাতানোর মত পরিবারগুলো এখন আর সীমান্তে পৌঁছেই আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারবে না। তাদের দেখাতে হবে তারা তৃতীয় একটি দেশে আশ্রয় চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে- যেমন মাতানোকে প্রথমে মেক্সিকোয় অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে হবে। সেখানে ব্যর্থ হলে তবেই তিনি আমেরিকায় ঢোকার জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে তারা পরিস্থিতি সামাল দিতে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় মানুষকে নতুন অভিবাসন আইন সম্পর্কে সচেতন করতে প্রচারণা শুরু করবে।
কিন্তু আজ স্থানীয় সময় রাত ১২টা পার হলে ভাগ্য খোলে কিনা – এই আশায় বুক বেঁধে এই মুহূর্তে সীমান্তে দাঁড়িয়ে আছেন হাজারো মানুষ- বহু ভাগ্যান্বেষী পরিবার। আমেরিকায় নতুন জীবন শুরু করার একই আশা নিয়ে দীর্ঘ পথে পাড়ি জমিয়েছেন আরও হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী। ‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়‘মোখায়’ পরিণত হয়েছে এবং এটি রবিবার যেকোনো সময় স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর এমন তথ্য দেয়ার পর থেকে কক্সবাজারে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা।
তবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা না থাকায় সেখানকার বাসিন্দাদের অনেকে স্পিড বোট ও মাছ ধরার নৌকায় টেকনাফের দিকে সরে যেতে শুরু করেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
সেইসাথে যারা সেন্টমার্টিনে টিন বা বাঁশের তৈরি ঘরে থাকেন, ঝড় আঘাত হানলে তারা সমুদ্র তীর থেকে দূরে বিভিন্ন রিসোর্টে সাময়িক আশ্রয় নেবেন বলে জানিয়েছেন।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমাদের এখানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রচার প্রচারণা হয় না, মাইকিং হয় না। স্থানীয়রা নিজ দায়িত্বে তাদের প্রস্তুতি নেয়, যাদের বোট (জলযান) আছে তারা টেকনাফে চলে যায়। আবার বয়স্ক ব্যক্তি বা যারা কাঁচা ঘরে থাকে তারা হয়ত রিসোর্টের বারান্দায় আশ্রয় নেয়।’
এদিকে কক্সবাজারের চারটি উপজেলা টেকনাফ, উখিয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালীকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান।
স্ট্যান্ডিং অর্ডার অন ডিজাস্টারের (এসওডি) নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সব কর্মকর্তাদের ছুটিতে না যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সাধারণত ৪ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দিলে মেগাফোন বা হ্যান্ড মাইকে প্রচারণা চালানো হয় সেইসাথে ফ্ল্যাগ ইন অর্থাৎ পতাকা টানিয়ে সতর্ক করা হয়। ফ্ল্যাগ ইনের নিয়ম হল সমুদ্রে ৪ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দিলে একটি পতাকা, ৬ নম্বর হলে দুটি পতাকা এবং ৭ বা এর বেশি সতর্কতার ক্ষেত্রে তিনটি পতাকা টানানো হয়।
তিনটি পতাকার অর্থ অতি দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হবে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলাজুড়ে থাকা ৫৭৬টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত করার কথা জানান সুফিয়ান।
সময় মতো সবাইকে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তবে উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় বসবাসকারীদের জন্য কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই। তাদের ঘরবাড়িও বড় ধরনের ঝড় বৃষ্টি মোকাবেলার উপযোগী নয়।
এমন অবস্থায় রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প ইন চার্জের অফিস এবং শক্ত কাঠামোর হাসপাতাল, মসজিদ ও সরকারি দফতরগুলোতে সাময়িক আশ্রয় দেয়া হতে পারে বলে তিনি জানান।
আবু সুফিয়ান বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ঘূর্ণিঝড়গুলোর পূর্বাভাস নির্ভুল থাকায় মানুষ নিরাপদে সরে যেতে চায়। আমরাও সাইক্লোন সেন্টারগুলোতে নিরাপত্তা বাড়িয়েছি। সেখানে সুপেয় পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, শুকনো ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা রাখা হবে।’
এজন্য সরকারের বরাদ্দকৃত টাকা ও শুকনো খাবারের যেন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা হয় সে বিষয়ে নজরদারি করার কথাও জানান তিনি।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলায় রেড ক্রিসেন্টের আলাদা আলাদা দল গঠনের কথা জানিয়েছেন কক্সবাজার রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের যুব প্রধান আশরাফ হোসেন।
সতর্ক সঙ্কেত ৬ হলে, সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা পাওয়া মাত্র এই দলগুলো কাজে নেমে পড়বে বলে তিনি জানান।
এরমধ্যে রয়েছে কন্ট্রোল টিম যারা সার্বিক তত্ত্বাবধানে কাজ করবে, মোবাইল মাইকিং টিম আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোয় প্রচার প্রচারণার কাজ করবে, দুর্যোগ চলাকালীন সময়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে মাঠে থাকবে ইউনিয়ন ডিজাস্টার রেসকিউ টিম, আশ্রয় কেন্দ্রে আহত কেউ থাকলে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবায় ফাস্ট এইড টিম কাজ করবে।
এরমধ্যে তারা কক্সবাজারের উপকূলীয় কয়েকটি এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সেগুলো হলো কুতুবদিয়া উপজেলার সমুদ্র সংলগ্ন সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া, মহেশখালী, টেকনাফ, উখিয়া, কলাতলী, হিমছড়ি, পেকুয়ায় সমুদ্র সংলগ্ন এলাকা।
এসব এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে তারা আগেভাগে কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন। তবে প্রতিবছরই উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গিয়ে তারা দেখেছেন বেশিরভাগ মানুষ তাদের ভিটেবাড়ি ছেড়ে আসতে চায় না।
এমন অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোয় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়ার কথা জানিয়েছেন হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আগে সরকারি কর্মকর্তারা তাদের নিরাপদে যেতে বললেও তারা বুঝত না। কিন্তু ওদের লোকই যখন ওদের ভাষায় বুঝিয়ে বলে তাদের জিনিসপত্র নিরাপদ থাকবে, ভয়ের কিছু নাই, বরং এখানে থাকলেই ঝুঁকি, তখন তারা সরে আসতে চায়। আমরাও আশ্বাস দেই যে আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে তাদেরকে বিশুদ্ধ পানি আর খাবার দেয়া হবে। অনাহারে থাকতে হবে না।’
এদিকে সরকারের দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলাকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির পরিচালক আহমাদুল হক জানান, ইতোমধ্যে সেখানকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে।
তবে তিনি বেশি জোর দিচ্ছেন ভূমিধসপ্রবণ এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে আগেভাগে সরিয়ে নেয়ার ওপর। কেননা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে পাহাড় ধ্বসের প্রবল ঝুঁকি রয়েছে।
সেইসাথে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের অন্তত দু’বেলার খাবার দিতে প্রয়োজনীয় টাকা এবং শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এছাড়া রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় প্রতিটি ক্যাম্পে ১০০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা মূলত রোহিঙ্গাদের বাড়িগুলোকে সাময়িকভাবে মজবুত করার কাজ করবে।
সেইসাথে ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে ক্যাম্পের ভেতরে থাকা কনক্রিটের কাঠামোয় রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নিতে এই স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবেন বলে জানান হক।
তবে ঝুঁকিতে থাকা সেন্ট মার্টিনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন সুবিধা হল, সেন্ট মার্টিনে কোনো পর্যটক নেই। সেখানকার জনসংখ্যা খুব কম। যারা আছে তাদের বলা হয়েছে ওখানে কিছু ভালো অবকাঠামোয় তারা যেন আশ্রয় নেয়।’
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় উপকূলবর্তী জেলাগুলোর প্রায় ১৫০ ফায়ার স্টেশন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় ও পরবর্তী সময়ে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: এনামুর রহমান বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় কমিটির সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে জানান।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ উপকূলীয় সব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। সেখানে ১৪ টন শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে ২০০ টন চাল চলে যাবে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি শেল্টার ম্যানেজমেন্টের জন্য। আমরা সবদিক থেকে প্রস্তুত রয়েছি।’
তিনি জানান, লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, আনসার, কোস্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি জানান।
ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর থেকে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাতে ক্ষয়ক্ষতি ও জানমালের ক্ষতি শূন্য পর্যায়ে থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়াসহ ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এরমধ্যে রয়েছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মেডিক্যাল টিম গঠন, খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং সাপে কাপড় দেয়া রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক অ্যান্টিভেনম মজুদ করা, অ্যাম্বুলেন্স এবং ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজনীয় জ্বালানিসহ প্রস্তুত রাখা।
সূত্র : বিবিসি
““““““““““
গোয়ালন্দে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ি) থেকে
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বৃহস্পতিবার বিকালে পানিতে ডুবে মিরাজ শেখ (১১) নামে ৪র্থ শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
মিরাজ গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নবুওসি মদ্দিন পাড়ার বাদল শেখের ছেলে। সে নবুওসি মদ্দিন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। ওই শিশুর প্রতিবেশী দলিল লেখক ভেন্ডার মোঃ আক্কাছ হোসেন জানান, শিশু মিরাজ প্রতিদিনের ন্যায় ঘটনার দিনও স্কুল ছুটি হওয়ার পর সহপাটিদের সাথে বাড়ি ফিরছিলো। এরপর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এ সময় তার সহপাটিরা জানায় মিরাজ বাড়িতে না গিয়ে নবুওসি মদ্দিন পাড়া খানকাহ পাক মসজিদের পাশে খালের পানিতে নামার পর আর উঠে আসে নাই। এ অবস্থায় ওই খালের পানিতে খোঁজাখুজি শুরু হয়। এক পর্যায় গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস অফিসে খরব দেয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে ওই খালের পানি থেকে সন্ধ্যা সারে ৬টার দিকে ওই শিশুটির মৃত দেহ উদ্ধার করে।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
বিএনপির ভবিষ্যৎ কী?গোলাম মাওলা রনি
ঘটনাটি কয়েক দিন আগের। একটি টেলিভিশনের টকশোতে অংশগ্রহণের জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। সহ আলোচক ছিলেন দু’জন। একজন সাংবাদিক আর অন্যজন আওয়ামী লীগ নেতা। অন্য দিকে, যিনি উপস্থাপিকা তার আওয়ামী লীগ প্রীতি যেকোনো কট্টর আওয়ামী লীগের কর্মীর চেয়ে বেশি। অনুষ্ঠানপূর্ব আলোচনা চলছিল- আমি মশকরা করে বললাম- একটি অনুষ্ঠানে যদি চারজনই আওয়ামী লীগার হয় তবে আলোচনা কিভাবে জমাবেন? তারা হিসাব করে তিনজন আওয়ামী লীগারকে খুঁজে পেলেন অর্থাৎ উপস্থাপিকা, সাংবাদিক এবং আওয়ামী লীগ নেতা। কাজেই চতুর্থ ব্যক্তি কে? এমন প্রশ্ন করার আগেই বলে ফেললাম যে, আমিও তো সারা জীবন আওয়ামী লীগ করেছি এবং নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে বিএনপিতে এসেছি। কাজেই তিনজন আওয়ামী লীগারের কাছে একজন নবীন বিএনপির আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর কিইবা করার থাকবে?
আমার কথা শুনে উপস্থিত লোকজন হো হো করে হেসে উঠলেন। তাদের সাথে অনুষ্ঠানপূর্ব আলোচনায় যা বুঝলাম, তাতে মনে হলো তারা সবাই আওয়ামী লীগের শক্তিমত্তা ও শেখ হাসিনার অলৌকিক ক্ষমতা সম্পর্কে অতিমাত্রায় আবেগপ্রবণ এবং আত্মবিশ্বাসী। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কেন প্রধানমন্ত্রীর সামনে বারবার নতজানু হন এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক কেন শেখ হাসিনার সামনে একান্ত অনুগত-বাধ্যগত এবং মুগ্ধ শিক্ষার্থীর মতো করে কাঁচুমাচু হয়ে বসেন তার ব্যাকরণগত অর্থ ব্যাখ্যা করে বাহারি সব তথ্য হাজির করে এ কথা প্রমাণের চেষ্টা করেন যে, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সাথে তুলনীয় কোনো রাজনৈতিক দল অথবা ব্যক্তিত্ব ধরাধামে নেই।
টকশোপূর্ব অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় উল্লিখিত ব্যক্তিদের কথাবার্তা শুনে আমার মনে সর্বকালের অন্যতম সেরা ইংরেজ সাহিত্যিক জর্জ অরওয়েল রচিত অমর সাহিত্যকর্ম ‘১৯৮৪’-এর কথা মনে এলো। দ্বিতীয়ত, গত কয়েক মাসের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যে মানসিক বিবর্তন ঘটেছে তাও আমি আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম। আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও পেশাগত দায়িত্বের কারণে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন সম্পর্কে এত দিনের যে ধারণা গড়ে উঠেছিল, তাও মারাত্মকভাবে ধাক্কা খেল সে দিনের তিনজন আওয়ামী লীগারের মনমানসিকতা দেখার পর। সুতরাং দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী বিশ্বাস-আওয়ামী হিম্মত ও আওয়ামী স্বপ্ন ও চেতনার যে নতুন ধারার অভ্যুদয় হয়েছে তার বিপরীতে বিএনপি তথা জাতীয়তাবাদী শক্তির করণীয় কী অথবা অনাগত দিনে বিএনপির পরিণতি কী হতে পারে সে চিন্তা আমাকে পেয়ে বসল।
আজকের শিরোনাম প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার আগে চলমান রাজনীতিতে যে বাস্তব পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা আবশ্যক। আওয়ামী লীগের গত এক যুগের চেষ্টা তদবিরের ফলে তাদের অবস্থা হয়েছে ক‚লহারা প্রবহমান নদীর মতো। বিষয়টি সহজ করার জন্য আমরা পদ্মা নদীর উদাহরণ দিতে পারি। ধরুন, আওয়ামী লীগ হলো প্রবহমান প্রমত্তা পদ্মা। নদীর যে চরিত্র সে মতে, পদ্মার একটি উৎসমূল যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে শেষ গন্তব্য অর্থাৎ পদ্মার স্রোত যেখানে গিয়ে সাগরে মিশেছে। আপনারা কমবেশি সবাই পদ্মা-গঙ্গা, যমুনা-সরস্বতী প্রভৃতি নদীর সৃষ্টি নিয়ে হিন্দু পুরাণের বিভিন্ন কল্পকাহিনী জানেন। হিন্দুদের দেবতা শিবের একাধিক স্ত্রী যারা আবার সবাই দেবী হিসেবে পূজিত। তারা কিভাবে একে অপরের অভিশাপে পদ্মা-গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী, ভাগিরথীতে পরিণত হয়েছেন তাও সাহিত্যের পাঠক কমবেশি জানেন।
তো গঙ্গা তথা পদ্মার সাথে যে দেবীর নাম জড়িত তিনি যদি হঠাৎ মনে করেন যে, নদীর যে তীরে তার বসতি সেটির বিপরীতে অন্য তীরে তার সতীনের বসবাস। সুতরাং সতীনের বাসস্থান ধ্বংসের জন্য পদ্মার দেবী যদি তার বিপরীত তীরে ক্রমাগত ভাঙন সৃষ্টি করেন তবে একটি সময় পদ্মা আর নদী থাকবে না- সেটি সাগরে বিলীন হয়ে নিজের অস্তিত্ব ও নামটি হারিয়ে ফেলবে।
পদ্মাকে নিয়ে যে রূপক উদাহরণটি পেশ করলাম- তা যদি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে তুলনা করি তবে দেখতে পাবো যে, তারা প্রতিদ্ব›দ্বী হটাও যা কি না পরবর্তীতে প্রতিদ্ব›দ্বী নির্মূলের পর্যায়ে চলে গেছে তা হালআমলে এসে আওয়ামী লীগকে তীরহারা বা ক‚লহারা পদ্মায় পরিণত করেছে। ফলে তারা নদীর এক পাড়ে বসে অপর তীরের অস্তিত্ব খুঁজে পাচ্ছে না। এ অবস্থায় তারা কি নদী নাকি সাগর নাকি আত্মপরিচয় হারিয়ে সাগরে আত্মাহুতি দিয়েছে, তা নিয়ে রসঘন রাজনৈতিক আলাপ অপরিহার্য।
আওয়ামী লীগ নিয়ে রূপক আলোচনা বাদ দিয়ে এবার সরাসরি কিছু কথা বলি। বাংলাদেশে গত ১২ বছরে তারা যা করেছে তার মোদ্দা কথা হলো- সীমিত গণতন্ত্র- পছন্দের বাকস্বাধীনতা এবং প্রচার-প্রপাগান্ডার উন্নয়ন। অন্য দিকে দেশ জাতি তাদের যেসব কর্মকাণ্ড দ্বারা দীর্ঘমেয়াদে ভোগান্তি ও দুর্ভোগ-দুর্দশার শিকার হবে তা হলো- মানুষের নৈতিক মান তলানিতে ঠেকেছে। সত্য কথা, সত্য কর্ম, সুবিচার-সুশিক্ষা ইত্যাদি সমাজ সংসার থেকেই কেবল উঠে যায়নি- বরং বই পুস্তকেও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। চোর-বাটপাড়-ডাকাত-লুটেরাদের দাপট ইতিহাসের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। খুনি ও ধর্ষকরা এখন ধর্মোপদেশ দেয়- ডাকাতরা ধনসম্পদের রক্ষকরূপে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। তস্কররা ব্যবসা-বাণিজ্যের রূপক এবং মূর্খরা জ্ঞানী ব্যক্তিদের
বিচারক-শিক্ষক-রক্ষাকর্তারূপে বাহাদুরি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। ফলে জাতিসঙ্ঘের এসডিজি অর্থাৎ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল বলতে যা বুঝায় তার একটিও আমরা অর্জন করতে পারিনি।
আজকে সারা দুনিয়ায় ভোট চোর ভোট চুরি ভোট ডাকাতি রাতের ভোট নিয়ে যে সমালোচনা নিন্দা ঘৃণা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে তা আমি আমার ক্ষুদ্র জীবনে দেখিনি বা শুনিনি। আফ্রিকার বহু দেশের অসভ্যতা নিয়ে বহু গল্প কথা রয়েছে। কিন্তু ভোট চোর ভোট চুরি নামক শব্দ উচ্চারণ করলে আকাশের নিচে তামাম জমিনের বাসিন্দারা একবাক্যে সে দেশ বা সে ব্যক্তির নাম তোতাপাখির মতো গড়গড়িয়ে বলে দেয় তা শুনলে এখন আর আমাদের বমি আসে না, লজ্জা শরমের বালাই আমাদেরকে বিব্রত করে না; বরং ক্ষেত্রবিশেষে আমাদের অনেকের মনে এক ধরনের আত্মতৃপ্তি-অহমিকাবোধ পয়দা হয়ে যায়। ফলে আমাদের মানসিক বিবর্তনের বর্তমান হাল হকিকতের জন্য বিএনপি-জামায়াত নাকি অন্য কাউকে দায়ী করব তা চিন্তা করার শক্তি আমাদের কয়জনের অবশিষ্ট রয়েছে, তাও আমার কাছে স্পষ্ট নয়।
উল্লিখিত অবস্থায় জাতির সামনে আরেকটি জাতীয় নির্বাচনের তোড়জোড় দৃশ্যমান হচ্ছে। রাজপথের মোনাফেক, পোশাকধারী বেহায়া, চর্ম নাই এমন নির্লজ্জ ভণ্ডদের দল এবং নানারকম তথাকথিত চেতনাবাজরা ১৭ কোটি বাংলাদেশীর শ্রম-ঘাম ও রক্তের দ্বারা অর্জিত অর্থের ওপর লালসার জিহ্বা বের করে যেভাবে বিএনপির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে হুঙ্কারের প্রস্তুতি শুরু করেছে তা সামাল দেয়ার জন্য বিএনপি কী করবে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন বিএনপি সর্বদা প্রকৃতিপ্রদত্ত সুযোগ পেয়ে ক্ষমতায় এসেছে। সুতরাং সারা দেশে গত একযুগে যা কিছু ঘটেছে তার প্রতিক্রিয়ায় মানুষ যেভাবে বিক্ষুব্ধ হয়েছে তাতে করে বিএনপির কিছুই করতে হবে না। সময় ও পরিস্থিতি তাদেরকে কাক্সিক্ষত মাকামে পৌঁছে দেবে।
বিএনপি সম্পর্কে যারা নেতিবাচক চিন্তা করেন তাদের বক্তব্য হলো, দলটি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। জাতীয় পার্টি ওয়ার্কার্স পার্টি জাসদ তরিকত ফেডারেশন, আটরশি হেফাজতের একাংশ চরমোনাই পীরের হাতপাখাসহ তৃণমূল আদিমূল মূল আসল প্রভৃতি বিএনপির লোকজন যেভাবে আওয়ামী লীগের দয়া করুণা সাহায্য ও সহযোগিতা নিয়ে নির্বাচন খেলায় শামিল হয়ে সংসদে যাওয়ার চেষ্টা করছে ঠিক একইভাবে তারেক রহমানকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে বিএনপি নামটি বিলীন হয়ে যাবে এবং সেই ধ্বংসস্ত‚পের ওপর যেসব আগাছা ও পরগাছা জন্ম নেবে তারাই আগামীর মধু নেয়ার ভাগীদার হবে।
বিএনপি বিরোধীদের সমালোচনা প্রপাগান্ডার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের বহুদিনের পুরনো দমননীতি, মামলা-হামলার পরাকাষ্ঠা নতুন উদ্যমে চালু করেছে। বিএনপি-জামায়াত ছাড়াও বিএনপি সমর্থক ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক প্রভৃতি শ্রেণী-পেশার লোকজন যেন সরকারের শেষ সময়ে কোনো বাধা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে একটি অজানা আশঙ্কা সারা দেশের ওপর ভর করেছে। তার ওপর প্রকৃতির বিরূপ আচরণ বিশেষ করে ইতিহাসের রেকর্ড ব্রেক করা গরম, বৈশ্বিক মন্দা, বেকার সমস্যা, ডলার সঙ্কট ইত্যাদি সব কিছু মিলে একটি হযবরল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সুতরাং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএনপির ভবিষ্যৎ কী হতে পারে তা যদি বুঝতে চান তবে নিম্নের অংশটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আপনি যদি বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের দিকে তাকান তবে দেখতে পাবেন তাদের মধ্যে কোনো উৎকণ্ঠা নেই; বরং সবাই এক ধরনের খোশ মেজাজে রয়েছেন। দলের শীর্ষ নেতারা বিশেষ করে তারেক রহমান এবং মির্জা ফখরুলের সাম্প্রতিক কথাবার্তা বিশ্লেষণ করলে বুঝতে পারবেন যে, তারা বেশ উৎফুল্ল, হাসিখুশি এবং আত্মবিশ্বাসী।অন্য দিকে বেগম জিয়া এবং ড. ইউনূসের দিকে তাকালেও একই দৃশ্য দেখতে পাবেন। বিপরীতে আওয়ামী লীগের লোকজনের দিকে তাকান এবং তাদের হাসি, কান্না, চলাফেরা, পোশাক আশাক, আহার নিদ্রা, প্রেম-বিনোদন ইত্যাদি পর্যালোচনা করুন। দেখবেন একের সঙ্গে অন্যটি মিলছে না- সব কিছু আপনার কাছে বেখাপ্পা লাগবে। এরপর আপনি ধীরস্থিরভাবে চিন্তা করুন এবং বিএনপির ভবিষ্যৎ কল্পনা করুন। আপনি সহজেই বাংলাদেশের রাজনীতির ভাগ্যাকাশে গ্রহ-নক্ষত্রের লীলাখেলা এবং প্রকৃতির ইচ্ছা-অনিচ্ছা টের পেয়ে যাবেন আর এখন আপনার বোধ-বুদ্ধি অনুযায়ী বিএনপির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে থাকুন।
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
দুধওয়ালামীযানুল করীম
কতটুকু দুধে কী পরিমাণ পানি মিশানো হয়েছে, কিংবা কতটা পানিতে কতটুকু দুধ দেয়া হয়েছে, তা পুরনো বিতর্ক। ‘স্যার নোংরা পানি মিশাই না; টিউবওয়েলের পরিষ্কার পানি দুধে মিশাই’। কথাটির সাথে অনেকেই পরিচিত।
সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলোর একটি ছোট্ট খবর পত্রিকাটির একজন সংবাদদাতার প্রেরিত। এক কলামের এই খবরে বলা হয়েছে, জনৈক বিক্রেতা যুবকের জরিমানা হয়েছে পানিতে দুধ দেয়ার দায়ে। সে নাকি ২৬ কেজি পানির সাথে ১৪ কেজি দুধ মিশিয়েছিল। এই হিসাবে সে শতকরা ৩৫ ভাগ দুধ দিয়েছিল ৬৫ ভাগ পানিতে। আমাদের শৈশবে-‘হাজী সাহেব’ খাঁটি দুধ দিতেন আমার বাসায়। তাকে আমরা ‘হাজী সাহেব’ বলেই চিনতাম, ‘দুধওয়ালা’ বলতাম না কখনো। তিনি ধোপদুরস্ত পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি পরে এবং পায়ে জুতাসহ আসতেন। মাথায় থাকত ছাতা। বাসা ছিল শহরতলীতে। তার ছেলে (আমার বড় ভাইয়ের ছাত্র) একটি মুসলিম দেশে আমাদের রাষ্ট্রদূত হয়েছিলেন এবং এখনো কলাম লিখেন পত্রিকায়। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীর শ্বশুর এবং তার ছেলে আমাদের স্কুলের সাবেক ছাত্র। যা হোক, সততার মান এত নিচে নেমে গেছে যে, দুধের সাথে পানি মিশানো হয় না। পানির সাথে দুধ মিশানো হয়। আগে উল্লিখিত পত্রিকায় বলা হয়েছে, মুচলেকা দেয়ায় পূর্বোক্ত যুবকের বেশি জরিমানা হয়নি। অবশ্য তার জরিমানার পরিমাণও কম নয়। সে একা নয়, দেশের বেশির ভাগ দুধ বেপারি দুধে পানি মিশায়। পাবনা ও সিরাজগঞ্জে রমজান মাসে ভেজাল দুধের রমরমা কারবারের কথা নয়া দিগন্তেই ছাপা হয়েছে।
আমরা এই ভেজালের ওপরই বেঁচে আছি। কবি বলেছেন, ‘আমরা সুহেই আছি, বাতাস খাইয়া পেট ফুলাইয়া ড্যাং ড্যাঙ্গাইয়া নাচি।’
সমাজের সর্বত্র যে, দুর্নীতি পরিব্যাপ্ত তার একটি প্রমাণ দুধে পানি মিশানো, বা পানিতে দুধ মিশানো হয়েছে। পূর্বে উল্লিখিত, দুধ বিক্রির ঘটনায় ওই যুবকের দুর্নীতি ধরা পড়েছে ল্যাকটোমিটার দিয়ে দুধ পরীক্ষায়। এখন সেই ল্যাকটোমিটারকে ফাঁকি দেয়ার জারিজুরিও আবিষ্কৃত হয়েছে।
সুনীতির বিপরীত কুনীতি বা দুর্নীতি। আর চার দিকে সে দুর্নীতির প্রবল প্রতাপ। আমরা দুর্নীতির ফসল ঘরে তুলে সুনীতি শিখব কোত্থেকে? এ জন্যই আজ সমাজে মন্দ লোকই বেশি।
শুধু গরিব দুধ বেপারিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। তারা তো সুযোগ পেলেই পেটের দায়ে দুর্নীতি করবে। ওদের না হয় ‘অভাবে স্বভাব নষ্ট’; কিন্তু যাদের স্বভাবই হচ্ছে দুর্নীতি করা, ওদের রুখবে কে? সবাই দুর্নীতি করে, কিন্তু দোষ হয় বেচারা দুধ বেপারির। ও গরিব বলেই কি ওকে অন্যদের চেয়ে বেশি শাস্তি ভোগ করতে হবে?সময় এসেছে সমাজের সর্বত্র থেকে যেকোনো ধরনের দুর্নীতি উৎপাটনের। সেটা দুধে হোক কিংবা অন্য কোথাও হোক, একই কথা। দুর্নীতি ও সুনীতি পাশাপাশি চলতে পারে না। এটা বিশেষ করে, সরকারকে বুঝতে হবে যে, দুর্নীতি সুনীতিকে গ্রাস করে নেয়। কিন্তু সুনীতি হারতে দেয়া যায় না।সমাজে সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত মানুষের খুব অভাব। যারা সুশাসন জণগণকে উপহার দিতে পারে, তারাই জাতিকে সৎ মানুষের উপহার দাতা। সৎ ও যোগ্য, উভয় প্রকার লোকই দরকার আমাদের। কিন্তু যে শিক্ষাব্যবস্থা কেবল যোগ্যতা সৃষ্টি করে, সততাকে উপেক্ষা করে, তা কি মূলত শিক্ষাব্যবস্থা? যত শিক্ষিত, তত অসৎ- এমন ধারণা যেন অশিক্ষিত মানুষের না হয়। আমাদের জোর দাবি-একই সাথে সৎ ও যোগ্য মানুষের শাসন চাই। অন্যথায় দুর্নীতি দূর হয়ে সুনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে না।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
সদাচারী ব্যক্তিই সফলকামপ্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী
সদাচারী ব্যক্তি অর্থাৎ উত্তম আচরণকারী ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হন। এখানে সদাচরণ বলতে আল্লাহর প্রতি, নিজের প্রতি, পরিবারের প্রতি, মানুষের প্রতি ও পুরো সৃষ্টির প্রতি উত্তম আচরণ করা বোঝাচ্ছে। আল্লাহর প্রতি সদাচার অর্থ আল্লাহ সম্পর্কে সুধারণা পোষণ, তার নাফরমানি না করা ও অনুগত হয়ে চলা। ইসলাম ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদে বিশ্বাসী। আল্লাহর দরবারে ব্যক্তিকে এককভাবে দাঁড়াতে হবে। কারো বোঝা কেউ বহন করবে না। ইসলামের দাবি- নিজে বাঁচো ও তোমার পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও। নিজেকে ধ্বংস করে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধন করতে ইসলাম বলে না; বরং পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধনের মাধ্যমে নিজের মর্যাদা উন্নীত করার কথাই বলে। নিজেকে বাঁচাও বলতে নিজের শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেয়ার পাশাপাশি নৈতিক মান সমুন্নত রাখা বোঝায়। মানুষ প্রায়ই নিজের সন্তান-সন্ততি ও আত্মীয়স্বজনের কারণে দুর্নীতি করে থাকে। এমন আচরণ ব্যক্তির নিজের প্রতি সদাচার নয়; বরং সুস্পষ্ট জুলুম। আবার ইবাদত-বন্দেগির নামে নিজের ওপর কাঠিন্য চাপিয়ে নেয়া ইসলামে পছন্দ নয়। ইসলাম মধ্যমপন্থা পছন্দ করে।ব্যক্তির পাশাপাশি পরিবারের প্রতি সুবিচার করার জোর তাগিদ ইসলাম তার অনুসারীদের প্রদান করে। পরিবারে সদাচরণ পাওয়ার সবচেয়ে বড় হকদার মা-বাবা, দাদা-দাদী, নানা-নানী ও ঊর্ধ্বে যদি কেউ থেকে থাকে। আল্লাহর আনুগত্যের পাশাপাশি মা-বাবার প্রতি সদাচরণ করার তাগিদ আমরা সূরা বনি ইসরাইলসহ কুরআন মাজিদে বিভিন্ন আয়াতে পাই। সবসময় তাদের প্রতি নত হয়ে চলা এবং বার্ধক্যে উপনীত হলে বিরক্তিসূচক একটু উহ্ শব্দও উচ্চারণ না করার জন্য আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। মা-বাবা ইন্তেকাল করলে তাদের জন্য দোয়া করার কথা আল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এবং দোয়া করার ভাষাও তিনি শিখিয়ে দিয়েছেন (রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি ছাগিরা)। যিনি দোয়া কবুল করবেন তিনিই আবার দোয়ার ভাষা শিখিয়ে দিয়েছেন, এ দোয়া কবুল না হয়ে পারে না। মা-বাবার কর্তব্য, সন্তানকে উত্তম খাবার, পোশাক ও ভালো প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করানোর পাশাপাশি দোয়াকারী নেক সন্তান হিসেবে গড়ে তোলা। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘সন্তানকে নৈতিকতা শিক্ষা দেয়া ছাড়া বাবা-মায়ের বড় কিছু দেয়ার নেই।
একটি পরিবারের ভিত্তি হলো স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি। মানুষ এদের প্রতি খুব দুর্বল থাকে। একজন ব্যক্তির নিজের প্রয়োজন খুবই সীমিত। বেশির ভাগ সময় স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির মনোরঞ্জনের জন্য মানুষ অন্যায় পথে পা বাড়ায়। আল্লাহপাক সূরা তাগাবুনে সতর্ক করেছেন- ‘তোমাদের স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির মধ্যে কতিপয় শত্রু, তাদের ব্যাপারে সাবধান থেকো।’ আল্লাহপাক সতর্ক করেছেন কিন্তু ঝগড়াঝাটি ও মারপিট করতে বলেননি; বরং ক্ষমা ও সহনশীল আচরণ করার কথা বলেছেন। স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা চোখকে শীতল করে দেয়ার জন্য আল্লাহপাক তাঁর কাছে দোয়া করতে বলেছেন। চোখজুড়ানো স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহ তায়ালার বড় নিয়ামত। একটি বয়সে উপনীত হলে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়ে। স্বামী-স্ত্রীর এই জুটিকে আল্লাহপাক পরস্পরের বন্ধু ও সাথী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। স্বামী-স্ত্রী এবং মা-বাবা ও সন্তানদের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবার প্রচেষ্টা থাকা দরকার। কখনো মনোমালিন্য ও রাগ-অভিমান হবে না, এমনটি নয়, স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সা:-এর জীবনেও ঘটেছে। এ ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশনা হলো- ক্ষমা ও সহনশীল আচরণ করা। উদারতা, ক্ষমাশীলতা জীবনটাকে সহজ করে, আনন্দময় করে। পক্ষান্তরে সঙ্কীর্ণতা জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। আল্লাহপাকের বাণী- ‘যে স্বীয় মনের সঙ্কীর্ণতা থেকে নিজেকে রক্ষা করল সেই প্রকৃত কল্যাণ লাভ করল।’ (সূরা তাগাবুন) সন্তান-সন্ততিকে সময় দিতে হবে, তাদেরকে সদাচরণ ও নৈতিকতা শিক্ষা দিতে হবে। সন্তানদের নামাজের ব্যাপারে তাগিদ দিতে হবে। নামাজের মাধ্যমে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে দূরে রাখার ব্যাপারে আল্লাহপাক নিশ্চয়তা দান করেছেন। আমরা আমাদের সন্তানদের দ্বীন শেখার ব্যাপারে যত্নশীল হই যাতে সন্তান আমাদের জন্য দোয়াকারী হয়।
আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, চলার পথের সাথী সবার সাথে সদাচরণ করা ইসলামের দাবি। দুর্ব্যবহার, জুলুম একজন মুমিনের কাছে অকল্পনীয়। সূরা হুমাজায় আল্লাহপাক বলেছেন- ‘নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনা সামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে।’ একটু গালাগাল ও অসাক্ষাতে নিন্দাবাদ যদি কারো ধ্বংস নিশ্চিত করে তাহলে যারা গুম-খুনের মতো ঘটনা ঘটায় তাদের পরিণতি কী হতে পারে? এক কথায় বলা যায়, জান্নাত রয়েছে সদাচারী ও বিনয়ী লোকদের জন্য। পক্ষান্তরে জাহান্নামের বাসিন্দা হবে দাম্ভিক, অহঙ্কারী ও জালেমরা। দুনিয়ার জীবনে জালেমের অঢেল ধনসম্পদ, ক্ষমতা ও মর্যাদা থাকলেও আখিরাতে সে হবে সবচেয়ে নিঃস্ব ও হতভাগা। মজলুমকে তার সব নেক আমল দেয়ার পরও পরিশোধ হবে না এবং মজলুমের গুনাহ জালেমের ঘাড়ে দিয়ে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।আল্লাহর এক নাম মুমিন এবং আমরাও মুমিন অর্থাৎ নিরাপত্তাদাতা এবং আল্লাহর সব সৃষ্টি আমাদের থেকে নিরাপদ। ইতর প্রাণী ও গাছপালা সব কিছুকে আমরা সুরক্ষা দান করব। এক পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর বিনিময়ে এক পতিতাকে ক্ষমা করার কথা আমরা জানি। ভারবাহী পশুকে অতিরিক্ত বোঝা না চাপানোর কথা বলা হয়েছে। জীব-জানোয়ারকে আটকে রেখে কষ্ট দেয়ার অধিকার কারো নেই। সমগ্র সৃষ্টি মানুষের খেদমতের জন্য এবং অবশ্যই তা মানুষের কল্যাণ সাধনে ব্যবহৃত হবে। অপ্রয়োজনে গাছের একটি পাতাও ছেঁড়া যায় না। মোট কথা, আল্লাহর সব সৃষ্টি মুমিনের কাছে নিরাপদ। সমাজের মানুষ কারো কাছ থেকে অসম্মানিত হবে বা শারীরিক বা মানসিকভাবে কষ্ট পাবে, এটি হতেই পারে না। যদি হয়ে থাকে তবে বুঝতে হবে, এমন লোকের মুমিন বা মুসলিম হওয়ার প্রশ্নই উঠে না। মুসলিম মাত্রই সৃষ্টির কল্যাণকামী। আল্লাহপাক একজন মুসলিমকে সেভাবেই উপস্থাপন করেছেন। আল্লাহর বাণী- ‘তোমরা শ্রেষ্ঠতম উম্মত, তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানবজাতির কল্যাণ সাধনের জন্য, তোমরা ভালো কাজের আদেশ দেবে ও মন্দ কাজে নিষেধ করবে।’
কুরআন মাজিদে নানা ভঙ্গিতে বলা হয়েছে, ঈমান ও নেক আমলে সমৃদ্ধ ব্যক্তি জান্নাতে যাবে এবং সূরা নূরের ৫৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে- ‘ঈমান ও নেক আমলে সমৃদ্ধ ব্যক্তিদের আল্লাহপাক খেলাফত দান করবেন।’ প্রশ্ন উঠতে পারে, কুরআন মাজিদে আল্লাহর পথে সংগ্রাম করার কথা বারবার বলা হয়েছে। সবই ঠিক আছে। তবে জান্নাতে যাওয়ার জন্য ন্যূনতম শর্ত করা হয়েছে নির্ভেজাল ঈমান ও ঈমানের দাবি অনুসারে নেক আমল করা। আল্লাহকে ইলাহ মেনে কিছু মৌলিক ইবাদত পালন যথেষ্ট নয়; বরং তাগুতকে অস্বীকার করে আল্লাহকে মানার কথা বলা হয়েছে। আনিই বুদুল্লাহা ওয়াজতানিবুত তাগুত (আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাগুতকে অস্বীকার করো)। আল্লাহ তায়ালা প্রতিদিন তাঁর অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করেন যদি সেই বান্দা শিরক ও হিংসা থেকে মুক্ত থাকে। কোনো ব্যক্তি যদি নিজেকে প্রমাণ করতে পারে যে, সে ইসলামের পক্ষের শক্তি তাহলে তার সামান্য আমল জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ট হতে পারে। ইসলামকে পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা হিসেবে মানার ক্ষেত্রে যদি কারো মধ্যে দুর্বলতা থাকে এবং ইসলামের শত্রুদের সাথে তার সখ্য থাকে তাহলে বুঝতে হবে, সে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের সার্থক অনুসারী নিরেট মুনাফিক বৈ আর কেউ নয়।
একজন ছাত্রের তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য হয়তো দৈনিক দুই ঘণ্টা করে পড়া যথেষ্ট হতে পারে; কিন্তু সে তাতে সন্তুষ্ট নয়। সে চায় সবার সেরা রেজাল্ট করতে। ফলে সে প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চালায় এবং দৈনিক ৮-১০ ঘণ্টা লেখাপড়া করে। দৈনিক দুই ঘণ্টা করে পড়ে উত্তীর্ণ হওয়া ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে। একজন মুমিনের বিষয়টি এমনই। নিষ্ঠাপূর্ণ ঈমান এবং মৌলিক ইবাদতসমূহ পালন ও সদাচরণের মাধ্যমে জান্নাতপ্রাপ্তির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু যারা আল্লাহর আনুগত্যের পাশাপাশি দ্বীন কায়েমের মাধ্যমে সবার জন্য আল্লাহর হুকুম পালন সহজ করে দিতে চায় তাদের মর্যাদা আল্লাহর কাছে অতি উচ্চে এবং তাদের জন্যই রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস।
লেখক : উপাধ্যক্ষ (অব), কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
একটি মুজেজা একটি কারামতহামিদ মীর
কুরআন ও রমজানের পরস্পরের মধ্যে বেশ গভীর সম্পর্ক রয়েছে। রমজানকে কুরআন নাজিলের মাস হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। অবশিষ্ট মাসগুলোর তুলনায় এ মুবারক মাসে কুরআন বেশি পড়া ও শোনা হয়। ইমাম নাসায়ি রহ: তার বিখ্যাত ‘ফাদায়িলুল কুরআন’ গ্রন্থে আল্লাহ তায়ালার কালামকে রাসূলের মুজেজা বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই একটি মুজেজার মধ্যে কয়েকটি মুজেজা লুকিয়ে আছে, যা সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে সামনে আসছে।
বিশ্বের প্রতিটি ভাষা কয়েক শ’ বছর পর বদলে যায়। কিন্তু কুরআন আরবি ভাষাকে অমর জীবন প্রদান করেছে। সব ভাষা বদলে গেছে, কিন্তু কুরআনের শক্তি আরবি ভাষাকে তার স্থান থেকে সরতে দেয়নি। সে ভাষার উচ্চারণভঙ্গিতে পার্থক্য এসেছে বটে, কিন্তু শব্দের মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসেনি। কেননা, কুরআনের শব্দেও দেড় হাজার বছরে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এ গ্রন্থ এমন এক নবীর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে, যিনি উম্মি ছিলেন, লেখাপড়া জানতেন না। কিন্তু আল্লাহর কালামের মাধ্যমে তিনি আরবি ভাষায় এমন কিছু শব্দেরও পরিচয় করিয়ে দেন, যা অপর ভাষা থেকে এসেছে। মাওলানা ওয়াহিদুদ্দিন খান তার ‘পয়গম্বরে ইনকিলাব’ গ্রন্থে বলেছেন, রহমান আরবি ভাষার শব্দ নয়। এটি সাবায়ি ও হিমইয়ারি ভাষা থেকে এসেছে। ইয়ামান ও হাবাশার খ্রিষ্টানরা আল্লাহকে রহমান বলত। কুরআনেও এ শব্দ আল্লাহর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। অনুরূপভাবে ফারসি, রোমান ও হিব্রæসহ বিভিন্ন ভাষার কমপক্ষে ১০০ শব্দ কুরআনের মাধ্যমে আরবিতে যুক্ত হয়েছে। যাতে কুরআনের পয়গাম প্রচুর পরিমাণে ছড়াতে পারে। প্রফেসর ডক্টর ফজলে করিম ‘কুরআনে হাকিমকে মুজেজাত’ (কুরআনে হাকিমের মুজিজাসমূহ) গ্রন্থে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে কুরআনের পর্যালোচনা করেছেন। শফি হায়দার সিদ্দিকির ‘কুরআনের মাজিদ কী সায়েন্সি তাসরিহ’ (কুরআন মাজিদের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা) এবং সুলতান বাশিরুদ্দিন মাহমুদের ‘কিতাবে জিন্দেগি’ গ্রন্থদ্বয়ও কুরআনে হাকিমের বিজ্ঞানভিত্তিক তাফসির। সুলতান বাশিরুদ্দিন মাহমুদ কুরআনে হাকিমের গাণিতিক বিন্যাস ও প্রকৌশলী ব্যবস্থাপনার ওপর আলোকপাত করেছেন, যা বিবেককে অবাক করে দেয়। যেমন কুরআনে দুনিয়া শব্দ ১১৫ বার এসেছে এবং আখিরাতও এসেছে ১১৫ বার। শয়তান এসেছে ৮৮ বার, ফেরেশতাও এসেছে ৮৮ বার। মৃত্যুর কথা উল্লেখ হয়েছে ১৪৫ বার এবং জীবনের কথাও উল্লেখ হয়েছে ১৪৫ বার। কালামুল্লাহয় ১৯ সংখ্যাটি একবার ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন- আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘দোজখের ওপর ১৯ জন ফেরেশতাকে পাহারাদার নিযুক্ত করেছি।’ (সূরা মুদ্দাসসির-৩০) লেখকের ধারণা, আল্লাহ তায়ালার নিরাপত্তাব্যবস্থার সাথে ১৯ সংখ্যার সম্পর্ক রয়েছে। কুরআনে কারিমের শুরুতে রয়েছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, এর শব্দসংখ্যাও ১৯টি। কুরআন এমন একটি মুজেজা, যা কয়েকটি কারামতকে সামনে উপস্থাপন করে। এমনি একটি কারামত মাওলানা আহমদ আলী লাহোরির ‘তাফসিরে লাহোরি’রূপে সামনে এসেছে। মাওলানা লাহোরির জন্ম তারিখ ২ রমজান এবং মৃত্যু তারিখ ১৭ রমজান। তিনি ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬২ সালে ৭৫ বছর বয়সে এ দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। কিন্তু তার তাফসির তার মৃত্যুর ৬২ বছর পর প্রকাশিত হয়। এই জ্ঞানগত কারামতকে দৃশ্যপটে আনার দায়িত্ব ছিল তার শিষ্য মাওলানা সামিউল হক শহীদের কাঁধে। এ মাওলানাকে ২০১৮ সালে শহীদ করা হয়। তিনি তার জীবনের শেষ দিনগুলোতে ‘তাফসিরে লাহোরি’ পূর্ণরূপ দানের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার শাহাদতের কারণে এ কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। পরবর্তীতে এ কাজ মাওলানা মুহাম্মদ ফাহাদ হক্কানি মাওলানা রাশিদুল হকের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন করেন এবং জামেয়া দারুল উলুম হাক্কানিয়া আকোড়া খাটাক ‘তাফসিরে লাহোরি’ ১০ খণ্ডে প্রকাশ করে। মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানী এ বিশাল কীর্তির ভূমিকায় বলেছেন, মাওলানা আহমদ আলী লাহোরির দরসে কুরআন সমগ্র দেশে বিখ্যাত ছিল। তিনি কওমি মাদরাসা থেকে শিক্ষা সমাপনকারীদের জন্য তিন মাসের তাফসির কোর্সের ব্যবস্থা করতেন।
মাওলানা সামিউল হক তার গুহাবন্ধু মাওলানা শের আলী শাহের সাথে লাহোর গিয়ে ওই তাফসিরের কোর্সে শুধু শরিকই হননি; বরং মাওলানা আহমদ আলী লাহোরির আলোচনাগুলো লিখে সংরক্ষিত করেন। তাফসিরে লাহোরির মুখবন্ধে মাওলানা সামিউল হক বলেছেন, তিনি ১৯৫৮ সালের রমজানুল মুবারক মাসে তাফসিরের কোর্সের জন্য লাহোর রওনার সময় তার পিতা মাওলানা আবদুল হক তাগিদ দিয়ে বলেন, মাওলানা আহমদ আলী লাহোরির কোর্সের লব্ধ জ্ঞান লিখে রাখবে। মাওলানা সামিউল হক তার উস্তাদের অনুমতি নিয়ে তার সব আলোচনা হুবহু নোট করেন। মাওলানা লাহোরির কুরআনের তাফসিরে শাহ ওলিউল্লাহ রহ. ও মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধি রহ.-এর শিক্ষার ঝলক ছিল। তাফসির কোর্স সম্পন্ন করার পর মাওলানা সামিউল হক তার সঙ্গী মাওলানা ডক্টর শীর আলী শাহসহ মাওলানা লাহোরির অপর ছাত্রদের থেকে তাদের পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করেন। অন্যদের পাণ্ডুলিপির সাথে নিজের পাণ্ডুলিপির তুলনা করেন এবং ধীরে ধীরে তাফসিরে লাহোরির কাজ করতে থাকেন। প্রশ্ন আসে, মাওলানা সামিউল হক তার উস্তাদের তাফসিরে এত পরিশ্রম করলেন কেন? নিজে কেন তাফসির লিখলেন না? আপনারা মাওলানা সামিউল হকের ডায়েরিতে এর জবাব পাবেন, যা তার জীবদ্দশায় ২০১৬ সালে প্রকাশ হয়েছিল। ওই ডায়েরিতে মাওলানা আহমদ আলী লহোরির কথা একাধিকবার উল্লেখ হয়েছে। এতে বোঝা যায়, মাওলানা সামিউল হক তার শিক্ষককে কতটা ভালো বাসতেন। এ ভালোবাসার একটি কারণ হচ্ছে, মাওলানা লাহোরির রেশমি রুমাল আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ততা। তিনি গুজরানওয়ালার জালাল নামে একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং সিন্ধুর গুঠ পীর ঝাণ্ডায় মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধি রহ.-এর কাছে শিক্ষার্জন করেন। ১৯০৯ সালে মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধি রহ. ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য ‘জমিয়াতুল আনসার’ গঠন করলে মাওলানা লাহোরিও তাতে যোগদান করেন এবং অপর সঙ্গীদের সাথে গ্রেফতারও হন। ১৯২৪ সালে মাওলানা লাহোরি লাহোরে মাদরাসা কাসেমুল উলম প্রতিষ্ঠা করেন এবং আঞ্জুমানে খুদ্দামুদ্দিনের মাধ্যমে কুরআন ও সুন্নাহ প্রচারের কাজ শুরু করেন।
তাফসিরে লাহোরির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- কুরআনের আয়াতের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মাওলানা আহমদ আলী লাহোরি তার সময়ের বিভিন্ন ঘটনাও উল্লেখ করেছেন। আর কিছু ব্যক্তিত্বের কথা নিজের মতো উল্লেখ করেছেন। তাফসিরে লাহোরির দশম খণ্ডে পেশোয়ারের কিসসা খানি বাজারে লাল পোশাকধারীদের ওপর ইংরেজদের গুলিবর্ষণের কথা উল্লেখ করেছেন, যাকে মাওলানা লাহোরি হক-বাতিলের যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন। এখানে তিনি খান আবদুল গাফফার খানের আন্দোলনকে ইসলামী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন। খান আবদুল গাফফার খানের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারীদের সাথে মাওলানা সামিউল হকের মতবিরোধ ছিল, কিন্তু তিনি তাফসিরে লাহোরিতে তার শিক্ষকের চিন্তাধারা হুবহু উল্লেখ করে চিন্তাগত সততার প্রমাণ দিয়েছেন। তাফসিরে লাহোরির শেষে বলা হয়েছে, মাওলানা আহমদ আলী লাহোরির দরসে জিন সম্প্রদায়ও অংশগ্রহণ করত। যেভাবে মানুষ ভালোও হয়, মন্দও হয় অনুরূপ জিনরাও ভালো ও মন্দ হয়ে থাকে। কুরআনের শিক্ষা বাস্তবায়ন করলে মানুষ ও জিন সম্প্রদায় এ বিশ্বকে শান্তির আবাসস্থল বানাতে পারবে। কুরআন একটি মুজেজা। আর তাফসিরে লাহোরি একটি জ্ঞানগত কারামত, যেটিকে প্রকাশ করে মাওলানা সামিউল হক এমন এক কর্ম উপহার দিয়েছেন, যা সর্বদা মনে রাখা হবে।
পাকিস্তানের জাতীয় পত্রিকা দৈনিক জং ১৩ এপ্রিল, ২০১৩ হতে উর্দু থেকে ভাষান্তরইমতিয়াজ বিন মাহতাবahmadimtiajdr@gmail.com হামিদ মীর : পাকিস্তানের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিস্ট
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে জনমনেআবদুর রহমান মল্লিক
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা না হওয়ায় জনমনে শঙ্কা বাড়ছে। আগামী নির্বাচন ২০১৪ বা ২০১৮ এর মতো হবে নাকি উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক হবে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। ২০২৩ সালের শেষ কিংবা ২০২৪ সালের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ভাবছে বলে মনে করা হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথম তিনটি নির্বাচন ছাড়া স্বাধীনতার পর যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে তার কোনোটারই অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। বাংলাদেশে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন যেন সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে।রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে আস্থাহীনতার বিষয়টি পুরনো। আর এই আস্থাহীনতা তারা নিজেরাই তৈরি করেছে। প্রতিটি সরকার পুনরায় ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার জন্য অগণতান্ত্রিক ও অন্যায্য পন্থা গ্রহণ করেছে। আমরা দেখেছি একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যে দল ক্ষমতায় ছিল পরের বার তারা আসতে পারেনি। কারণ জনসমর্থন হারানোর ফলাফল তারা হাতেনাতে পেয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাচনী ব্যবস্থা কোনোভাবেই ঠুঁটো জগন্নাথ মার্কা ইসির মতো নয়। তখন কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কার্যকর ছিল না। বর্তমান বাস্তবতায় বড় দুটো দল যদি নির্বাচনে না আসে তবে সেই নির্বাচনের প্রতি জনগণের কোনো আগ্রহ থাকে না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যদি বলে দেন, কে নির্বাচনে এলো কে এলো না এটা কমিশনের দায় নয়। ভোট কেন্দ্রে ভোটার এলো কি এলো না সেটাও ইসির দায় নয়। তাহলে দায়টা কিসের? এসব বক্তব্য শুনলে স্বাভাবিকভাবে জনগণ মনে করে এ নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ।একটু ভেবে দেখুন, সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী ইসি বলতে থাকেন নির্বাচন ইভিএম পদ্ধতিতেই হবে। এখন ইভিএম মেশিন বিকল থাকায় তা মেরামতে যে ব্যয় হবে সে অর্থ সরকারের কাছে নেই। ফলে ইভিএম নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য এখন শোনা যায় না। অথচ ইভিএম নিয়ে তর্ক বিতর্ক আমরা কম শুনিনি। নির্বাচন নিয়ে নেতানেত্রীরা যা বলেন তা বগলে ইট মুখে শেখ ফরিদের মতো। কেউ একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিটি গঠন নিয়ে কাজ করেন না। সাড়ে তিনশত সংসদ সদস্য রাষ্ট্রের যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন তার বিপরীতে তারা কেবল ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থেই কাজ করেন। তারা জনগণের সেবক না হয়ে প্রভু বনে যান। রাষ্ট্র বিনির্মাণে তারা যদি যথার্থ ভ‚মিকা রাখতেন তবে রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা এতো ভঙ্গুর হয়ে পড়ত না।
ব্যক্তিগত সততা আর নৈতিকতা যদি শক্তিশালী না থাকে তবে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তিনি ভালো কিছু করতে পারেন না। সেদিক থেকে আমাদের তিন বিচারপতি বাংলাদেশের ইতিহাসে সম্মানের ও গৌরবের স্থান দখল করেছেন। যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। ১. বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ (১৯৯১) ২. বিচারপতি হাবিবুর রহমান (১৯৯৬) ৩. বিচারপতি লতিফুর রহমান (২০০১)। তাদের সময়ে অন্যান্য উপদেষ্টারাও ছিলেন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও নিজ নিজ অবস্থানে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। ফলে তারা তাদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। ওই তিন বিচারপতির সকলেই প্রয়াত হয়েছেন। তাদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।ইয়াজউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের আমলে কিভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয় ও কার্যকারিতা হারায় সে ইতিহাস আমাদের কমবেশি জানা। চতুর্থ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয় ২০০৬ সালে। প্রথমে ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নিয়োগ দেয়া উপদেষ্টাদের মধ্যে চারজন এক মাসের ঊর্ধ্বে কাজ করার পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের সাথে মতানৈক্যের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন। এরা হলেন- ড. আকবর আলি খান, লে. জে. হাসান মশহুদ চৌধুরী, সি এম শফি সামী ও সুলতানা কামাল চক্রবর্তী। একপর্যায়ে সকল প্রধান উপদেষ্টাসহ সকল উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন। রাষ্ট্রপতি দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফখরুদ্দীন আহমদকে নতুন প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ২৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশে সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন। প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়াকেও দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার করে। দেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা হয়।আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জনসমর্থনপুষ্ট দুটো বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তারাই দেশ পরিচালনা করবে এটাই স্বাভাবিক। দুর্ভাগ্যজনক হলো তারা কেউই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষমতাসীন সরকার গত দুই মেয়াদে বহু উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলেও ভোটের অধিকার হারা জনগণ সরকারের প্রতি ততটা প্রসন্ন হতে পারেনি। মর্যাদাপূর্ণ রাজনীতির স্বার্থে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া প্রয়োজন। ভোট কিভাবে হবে তা নিয়ে ঐকমত্য না থাকায় জনমনে দিন দিন ভীতি ও নির্বাচনকালীন সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই সরকারের উচিত হবে আগামী নির্বাচনে শান্তি ও শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
ধুনটে বজ্রপাতে শিশুর মৃত্যুধুনট (বগুড়া) সংবাদদাতা
বগুড়ার ধুনটে বজ্রপাতে রহমাত আলী জেহা মিয়া (১১) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে বজ্রপাতে শিশুটির মৃত্যু হয়।
রহমাত আলী উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের জয়শিং গ্রামের আলম মন্ডলের ছেলে এবং ওই গ্রামের রতনগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টির সময় শিশু জোহা তার বাবার সাথে বাঙ্গলী নদীর তীরবর্তী মাঠে খড় সংরক্ষণ কাজে সহযোগিতা করছিল। ওই সময় হঠাৎ বজ্রপাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মৃত অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসে।
ধুনট থানার এসআই হায়দার আলী জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেছি। ভিকটিমের মৃত্যুর ব্যাপারে কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ বিনা ময়নাতদন্তের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আজাদের মুক্তির দাবিতে ফতুল্লায় বিক্ষোভ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিকারাবন্দী বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ফতুল্লা থানা ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল ও তাতি দলের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১১মে) বিকেলে ৪টার দিকে ফতুল্লার শিয়াচর তক্কার মাঠ থেকে শুরু হয়ে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ সড়ক দিয়ে জালকুড়ি কড়াইতলায় গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।
এ সময়ে মিছিল থেকে নেতাকর্মীরা কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুলসহ আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১০ নেতা-কর্মীসহ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন, ফতুল্লা থানা কৃষক দলের আহ্বায়ক শাহ আলম ব্যাপারী, সদস্য সচিব আজিজুল হক চৌধুরী, ফতুল্লা থানা তাঁতী দলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান উজ্জল, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সাগর সিদ্দিকী, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো: আমিনুল ইসলাম লিটন, যুগ্ম আহ্বায়ক মো: মামুন হোসাইন, মো: নাঈম মোল্লা, কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো: আলী, আলামীন, রাহাত চৌধূরী, থানা তাঁতী দল নেতা মিজানুর রহমান মিজান, কামাল হোসেন, মাসুদ, রহিম, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সেলিম, শামীম, শহিদুল, আলতাফ, সোহাগ, জাহাঙ্গীর, মিলন ঢালী, সেন্টু কাজী, মো: আলী, সোহেল, ছাত্রদল নেতা আরিফ, জীবন, হৃদয়, তুরান, হাসান, জীম, মেহেদী, তূর্যসহ আরো অনেকে।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘৫ বছরের সাজা এড়াতে ১৮ বছর পলাতকচান্দিনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বাসিন্দা কবির হোসেন কিশোর বয়সে ৩০ বছর আগে কাজের তাগিদে চট্টগ্রামে যান। সেখানে একটি রিকশা গ্যারেজে কাজ করা অবস্থায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িয়ে গ্রেফতার হন। জামিনে থাকাবস্থায় ওই মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হওয়ায় ১৮ বছর যাবৎ পলাতক কবির হোসেন (৪৫) নামের ওই ব্যক্তি। অবশেষে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় চান্দিনা থানা পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়া কবির হোসেন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের ভোমরকান্দি গ্রামের মমতাজ উদ্দিন মিন্টুর ছেলে।
বুধবার (১০ মে) দিবাগত রাত চট্টগ্রামের খুলশী থানাধীন আমবাগান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে চান্দিনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম ও সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রিয়াজুল ইসলাম। পরদিন বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে তাকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ জানায়, ২০০১ সালে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা মামলার আসামি কবির হোসেন ওই মামলায় কয়েকবার কারাগারে যাওয়ার পর ২০০৪ সালে ওই মামলায় তার পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে দু‘মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে চট্টগ্রামের বিচারিক আদালত। ওই মামলার ভয়ে পলাতক হয় কবির হোসেন। সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামির গ্রেফতারি পরোয়ানাটি চান্দিনা থানায় প্রায় দেড় যুগ পড়েছিল। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই পলাতক আসামি চট্টগ্রামেই বসবাস করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে চট্টগ্রামের ভাড়া বাসা থেকে আটক করা হয়।
চান্দিনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: আজিজুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারি পরোয়ানাটি ২০০৪ সালেই চান্দিনা থানায় আসে। আসামি এলাকায় না থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে অনেক তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছি।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘মেহেরপুরে ৪০ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাগাংনী (মেহেরপুর) সংবাদদাতা
গত মৌসুমে মেহেরপুর জেলায় প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদন হয়েছিল। চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমির আম বাগান থেকে ৪০ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ মনে করছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার আম বেচাকেনা হবে।
আম চাষিদের মতে অনুকূল পরিবেশের কারণে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। মেহেরপুর জেলার বিখ্যাত বনেদিজাতের বোম্বাই, হিমসাগর এবং ন্যাংড়ার সাথে রয়েছে ফজলি, আম্রপলি, রুপালিসহ সুস্বাদু বিভিন্ন জাতের আম চাষ আছে। এর মধ্যে বাগান মালিকরা আম ভাঙার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আম চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর কৃষি জমিতে তৈরি করা হচ্ছে আমের বাগান। এ সব বাগানে হিমসাগর, ন্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসাপাতি, খিরসাভোগ, জামাইভোগ, ফজলি, কাঁচামিঠা, কুমড়াজালি, খেজুরছড়ি, পেয়ারাফুলি, নারকেল পাখি, গুলগুলি, আষাঢ়ে, আশ্বিনা, বারোমাসি, মোহনভোগসহ অসংখ্য নাম, রং, স্বাদ ও গন্ধের আম চাষ আছে। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এখানকার মাটির গুণেই আম খুবই সুস্বাদু।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
আনোয়ারায় ডায়রিয়ার ১৫ দিনে ৪৬০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় দিনে দিনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ১৫ দিনে ডায়রিয়া নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন ৪৬০ জন রোগী। এছাড়াও প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে প্রাইভেট ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরো অনেক রোগী। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা হাসপাতালের সেবা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তীব্র তাপদাহ ও দূষিত খাবার, পানিই এ ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাবের অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ।
তিনি জানান, ডায়রিয়া চিকিৎসার সরঞ্জাম পর্যাপ্ত রয়েছে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ জনের ওপরে ডায়রিয়া রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। এই তীব্র গরমে ডায়রিয়া থেকে বাচঁতে রাস্তার আশে পাশের দূষিত খাবার না খাওয়া ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন।
তিনি আরো বলেন, ডায়রিয়া দেখা দিলে রোগীদের খাবার স্যালাইন, ডাব খাওয়াতে বলেন আর অতিরিক্ত হয়ে গেলে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন এই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
বরগুনায় ঘূর্ণিঝড়‘মোখা’ ইস্যুতে ৬৪২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুতপাথরঘাটা (বরগুনা) সংবাদদাতা
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলা বরগুনার পাথরঘাটায় তিনটি মুজিব কেল্লা ও ৬৪২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরাতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পাথরঘাটা স্টেশনের কর্মকর্তারা নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজনকে ঘূর্ণিঝড় মোখা থেকে বাচতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেল ৫টার দিকে বিষখালী নদী সংলগ্ন পাচচুঙ্গা এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে বরগুনা জেলা মস্যজীবি টালার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় উপেক্ষা করে প্রায় দুই শতাধিক মাছধরা ট্রলার গভীর সমুদ্রে অবস্থান করছে। এর মধ্যে কিছু ট্রলার উপকূলের দিকে রওনা হওয়ার সংবাদও পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
ইমরান খান গ্রেফতার : বিক্ষোভকারী-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১০
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার থেকে পাকিস্তানে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যকার সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন নিহত এবং ১ হাজার ৭৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দেশটির বিভিন্ন হাসপাতাল ও পুলিশ কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে এ তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ ও হাসপাতালের একাধিক সূত্র সিনহুয়াকে জানিয়েছে, নিহতরা সবাই বেসামরিক নাগরিক এবং আহতদের মধ্যে ১ হাজার ৩৯৩ জন বেসামরিক এবং ৩৫৭ জন পুলিশ সদস্য রয়েছে।
খানের গ্রেফতারের পর তার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের কর্মীরা রাস্তায় নেমে আসার পর সংঘর্ষ শুরু হয়।
ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) মঙ্গলবার খানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রাঙ্গণ থেকে দুর্নীতির অভিযোগে আটক করে, যখন তার বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি মামলার শুনানির জন্য তাকে সেখানে হাজির করা হয়েছিল।
দেশটির ফেডারেল সরকার বিক্ষোভকারীদের থামাতে এবং আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে রাজধানী ইসলামাবাদ এবং পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের প্রধান শহরগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।
সূত্র : ইউএনবি‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘‘
মিরসরাইয়ে বিদ্যুতের ভেল্কিবাজিতে জনজীবন অতিষ্ঠ
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
টানা এক সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপদাহের সাথে বিদ্যুতের ভেল্কিভাজিতে অতিষ্ঠ জনজীবন। রাত-দিন দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন এখানকার জনসাধারণ। দিনের বেলা বাধ্য হয়ে মানুষ ঘরের বাইরে যাচ্ছে। কাজ শেষে রাতে বাসা-বাড়িতে ঠিকমতো ঘুমানোর অবস্থাও নেই। বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার কারণে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে বিদ্যুৎ নির্ভর ব্যবসা বাণিজ্য। এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যঘাত ঘটছে। শ্রেণি কক্ষে গরমের কারণে বসতে পারছে না ছাত্র-ছাত্রীরা।
উপজেলার আবুতোরাব ফাজিল মাদরাসা থেকে এবারের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়া এক পরিক্ষার্থীর অভিবাবক গোলাম কিবরিয়া জানান, বিদ্যুৎ যেন লুকোচুরি খেলছে। একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে চলছে বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি। এতে করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি মনোযোগ হারাচ্ছে।
তিনি জানান, দিনে যেমন লোডশেডিং চলছে রাতেও চলছে একই গতিতে। অনন্ত রাতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকলে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটতো না।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলায় গরমের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দক্ষিণ মিরসরাইয়ের তুলনায় বারইয়ারহাট এলাকায় তাপমাত্রা একটু বেশি থাকে। উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় লোডশেডিং হচ্ছে পাল্লা দিয়ে।
মিরসরাই সদরের ব্যবসায়ী মো: বেলায়েত জানান, সকাল থেকে সারাদিন কতবার লোডশেডিং হচ্ছে তার কোনো হিসেব নেই। দুপুরে যখন তীব্র গরমে সবাই হাঁসফাঁস করছে তখনো বিদ্যুৎ থাকে না। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। এ দিকে যেমন অতিরিক্ত গরম অন্য দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক গরম, এর মাঝে নেই বিদ্যুৎ।
উপজেলার বড়তাকিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মো: রায়হান চৌধুরী জানান, এ বাজারটিতে এক ঘণ্টা বিদ্যুত থাকে তো পরের ঘণ্টায় থাকে না। এক ঘণ্টা পর পর যাচ্ছে বিদ্যুৎ। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে আরো বেড়ে যায়। বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছি।
একই এলাকার বাসিন্দা মো: ফারুক জানান, ইতোমধ্যে দেশের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে গরমের। তার মধ্যে চলছে বিদ্যুতের চরম লোডশেডিং। দুপুর হলে উধাও হয় বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ আসলেও স্থায়ী হচ্ছে না। বাচ্চাদের লেখাপড়ার এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে যাচ্ছে এখন। আর এত গরমে, এত লোডশেডিং খুবই কষ্টদায়ক।
আবু তোরাব বাজারের ব্যবসায়ী মো: হাসান জানান, রমজানের আগে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক থাকলেও রমজান মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় লোডশেডিং। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ মাসে বিদ্যুৎ অনিয়মিত। এই যায় এই আসে। বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় অন্ধকার হয়ে পড়ে পুরো মার্কেট। তখন হিমশিম খেতে হয় ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর মিরসরাই উপজেলার চাহিদা প্রতিদিন ৫৮ মেগাওয়াট। সরবরাহ ২০ মেগাওয়াট, লোডশেডিং ৩৮ মেগাওয়াট। তবে বেশিরভাগ এলাকায় চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর মিরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম (ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার) সাইফুল আহমেদ বলেন, চাহিদা মতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় এমন লোডশেডিং হচ্ছে। চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ও ৩ বারইয়ারহাট গ্রীড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পেয়ে থাকে। মিরসরাইয়ের চাহিদা ৫৮ মেগাওয়াট। কিন্তু সেখানে আমরা পাচ্ছি মাত্র ২০ মেগাওয়াট। তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। চাহিদা অনুযায়ী যদি আমি না পাই তাহলে তো অবশ্যই লোডশেডিং হবে। সেটা আমরা গ্রাহক চাহিদার ওপর নির্ভর করে সরবরাহ করছি।
বিদ্যুৎ না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হয়ে থাকে। তীব্র গরমের কারণে গ্রাহক চাহিদা বেড়ে যায়। সে অনুপাতে সরবরাহ কম পাওয়ায় এমনটা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
“““““““““
সিরিজে প্রথম জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ
ভেন্যু বদলের সাথে সাথে যেন ভাগ্যও বদলেছে বাংলাদেশের। রাজশাহী রাজ কপাল হয়েই দেখা দিল জুনিয়র টাইগারদের। চট্টগ্রামে একমাত্র চারদিনের ম্যাচ হারের পর প্রথম দুই ওয়ানডেতেও হেরেছিল যুবারা, তবে রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার তৃতীয় ওয়ানডেতে ৪ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে জুনিয়র টাইগাররা।
শহীদ এইচএম কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে এ দিন আগে ব্যাট করা পাকিস্তান অলআউট হয় ১৫৪ রানে। বল হাতে ৩টি করে উইকেট নেন রোহানাতুল্লাহ ও ইকবাল হাসান। জবাবে কিছুটা খেই হারালেও ২৬ ওভারেই লক্ষ্য পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। আদিল বিন সিদ্দিক করেন ৩৬ রান।
আরেক ওপেনার মাজহারুল ইসলামকে সাথে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই আদিল বিন সিদ্দিক তুলে ফেলে ৫৯ রান। ৩৪ বলে ৩৬ রান করা আদিল আউট হলে ভাঙে জুটি। ৬ বলের ব্যবধানে আউট হন মাজহারুলও। তার ব্যাটে আসে ২৫ বলে ২১ রান।
৩ নম্বরে নেমে জিসান আলমের ব্যাটে আসে ১৯ বলে ২৪ রান। মাঝে অবশ্য ব্যর্থ আরিফুল ইসলাম ও অধিনায়ক আহরার আমিন আউট হন যথাক্রমে ১২ ও ৭ রান করে। ৯৫ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর কিছুটা শঙ্কা জাগলেও তা কেঁটে গেছে সময়ের সাথে সাথে।
শিহাব জেমসের ২৫ বলে ২৭ ও শেষ দিকে দুই ওপরাজিত ব্যাটার মাহফুজুর রাব্বি এবং পারভিজ জীবনের ব্যাটে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। রাব্বি ৮ ও জীবন ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। পাকিস্তানের আইমাল খান নেন ২ উইকেট।



RelatedNews

বাংলাদেশ

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে বিচার শুরু

06/06/2023
বাংলাদেশ

এবার বেসরকারি স্কুলের প্রাথমিকের পাঠ ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ

06/06/2023
বাংলাদেশ

কুমিল্লায় আ’লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, দীর্ঘ যানজট

06/06/2023
বাংলাদেশ

টেন্ডার ডিজাইনেই গেল ৭ বছর

06/06/2023
বাংলাদেশ

চার বছরে সরকারের ব্যাংক গ্যারান্টি বেড়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা

06/06/2023
বাংলাদেশ

কেমন হতে পারে নির্বাচনকালীন সরকার

06/06/2023
Load More
Samatal News

সাপ্তাহিক সমতল
সম্পাদক: মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন।
নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল নাহিদ মিয়া (নাহিদ মিথুন)

৩২, মায়াকানন, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৪।
Email: samataldesk@gmail.com
Cell: +88-01711237484,
NewsHunt App: https://samatalnews.com/

Follow Us

  • About
  • Contact
  • Terms & Privacy
No Result
View All Result
  • Home
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • প্রতারণা ও দুর্নীতি
  • মতামত
  • সাংবাদিকতা
  • আমার অধিকার
  • সকল গণমাধ্যম
  • App
  • সংবাদ দিন

© 2021 NewsHunt

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Create New Account!

Fill the forms below to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
  • Total: 85.9K
  • 67.4KSHARES
  • 17.9KTWEETS
  • Viber
  • WhatsApp
  • 652Email
  • Share
  • SHARES
  • TWEETS
  • +1S
  • PINS
  • SHARES
  • Digg
  • Del
  • StumbleUpon
  • Tumblr
  • VKontakte
  • Print
  • Email
  • Flattr
  • Reddit
  • Buffer
  • Love This
  • Weibo
  • Pocket
  • Xing
  • Odnoklassniki
  • ManageWP.org
  • WhatsApp
  • Meneame
  • Blogger
  • Amazon
  • Yahoo Mail
  • Gmail
  • AOL
  • Newsvine
  • HackerNews
  • Evernote
  • MySpace
  • Mail.ru
  • Viadeo
  • Line
  • Flipboard
  • Comments
  • Yummly
  • SMS
  • Viber
  • Telegram
  • JOIN US
  • Skype
  • Messenger
  • Kakao
  • LiveJournal
  • Yammer
  • Edgar
  • Fintel
  • Mix
  • Instapaper

Add New Playlist

Send this to a friend