• Home
  • Terms & Privacy
  • About
  • Contact
Saturday, June 3, 2023
সমতল
Advertisement
No Result
View All Result
  • Home
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • প্রতারণা ও দুর্নীতি
  • মতামত
  • সাংবাদিকতা
  • আমার অধিকার
  • সকল গণমাধ্যম
  • App
  • সংবাদ দিন
No Result
View All Result
সমতল
No Result
View All Result
Home বাংলাদেশ

চীন নাকি যুক্তরাষ্ট্র কার দিকে বাংলাদেশ?

02/05/2023
Reading Time: 2min read
A A


বাংলাদেশের যেসব দেশের কূটনীতিককে সব সময় নানা বিষয়ে সরব ভূমিকায় দেখা যায়, চীনা রাষ্ট্রদূত সাধারণত সেরকম কেউ নন। বিশেষ করে পশ্চিমা কূটনীতিকরা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতি হতে শুরু করে নানা বিষয়ে যেভাবে প্রকাশ্য মন্তব্য করেন, তাকে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘নাক গলানো’ বলেই গণ্য করেন অনেকে। চীনা কূটনীতিকরা সাধারণত এ ধরনের মন্তব্য সযত্নে এড়িয়ে যান।
কিন্তু ২০২১ সালের ১০ মে ঢাকায় তৎকালীন চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সাংবাদিকদের কাছে এমন কিছু কথা বললেন, যা মারাত্মক অস্বস্তি তৈরি করলো বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে।
বাংলাদেশ এ নিয়ে এতটাই বিব্রত হলো যে, পরদিনই সরকার চীনা রাষ্ট্রদূতের কথার প্রতিবাদ জানালো। চীনের মতো ঘনিষ্ঠ মিত্র একটি দেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এরকম প্রকাশ্য বিবৃতি, এটিও ছিল খুবই বিরল এক ঘটনা।
রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সেদিন ঢাকায় কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সাথে কথা বলছিলেন ‘কোয়াড’ (কোয়াড্রিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ) নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের এক নিরাপত্তা জোট নিয়ে। তিনি এই জোটে যোগ দেয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, যদি বাংলাদেশ এই জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি চীনের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ‘বড় ক্ষতি’ করবে।
তিনি আরো বলেছিলেন, কোয়াড হচ্ছে ‘চীনের পুনরুত্থান ঠেকানোর এক সামরিক জোট’ এবং বাংলাদেশের উচিৎ হবে না, এরকম একটি ‘সংকীর্ণ লক্ষ্য’ অর্জনের চক্রে সামিল হওয়া।
চীনা রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যে ঢাকা কতটা অসন্তুষ্ট হয়েছিল, তা টের পাওয়া যায় পরের দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের কড়া জবাবে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র। আমরাই আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করি। আমাদের দেশের এবং জনগণের স্বার্থ বিবেচনা করে আমরাই সিদ্ধান্ত নেব আমরা কী করবো।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন আরও বলেছিলেন, কোয়াডের সদস্য দেশগুলোর কেউই বাংলাদেশকে এই জোটে যোগ দিতে বলেনি, কাজেই চীনা রাষ্ট্রদূত যেকথা বলেছেন তা অকাল প্রসূত।
তিনি বলেন,‘চীন বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে এমনটি খুবই ব্যতিক্রমী একটা ঘটনা, চীনের কাছ থেকে এটা আমরা আশা করিনি।’
বিশ্বের দুই বৃহৎ শক্তি যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ কীভাবে জড়িয়ে পড়ছে এবং সেটি এই দুই দেশের সাথেই তাদের সম্পর্কে কীরকম টানাপোড়ন তৈরি করছে, তার উদাহরণ হিসেবে এই ঘটনার কথা উল্লেখ করছিলেন কুয়ালালামপুরের মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মাহমুদ আলী।
তিনি বলেন, ‘এই কোয়াড গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সদস্য দেশগুলো বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশকে তাদের সাথে সহযোগিতার হাত বাড়াবার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ চীনের দিক থেকে এ নিয়ে সতর্কবাণী পেয়েছে। কাজেই আমরা দেখতে পাচ্ছি চীন এবং চীন বিরোধী জোটের মধ্যে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে, এরই মধ্যে বাংলাদেশের ওপর তার প্রভাব পড়ছে।’
‘বাংলাদেশকে দেশের ভেতরের এবং বাইরের নানা চাপ মোকাবেলা করে এখানে একটা ভারসাম্য বজায় রাখতে হচ্ছে। কাজটি বেশ কঠিন।’
বাংলাদেশ কেন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল?স্বাধীনতার পর হতে গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মোটামুটি একটি ভারসাম্যমূলক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে এসেছে। বৃহৎ শক্তিগুলোর দ্বন্দ্ব থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এই প্রথম দেশটি নিজেদেরকে এমন একটি অবস্থানে দেখতে পাচ্ছে, যেখানে ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক এরকম একটি দ্বন্দ্বে তাদের জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র দেশগুলোর ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় ধরনের বাঁক বদল ঘটেছিল ২০১৭ সালে। ওই বছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে।
বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরই নামের যে মহা-পরিকল্পনা নিয়ে চীন বিভিন্ন দেশে প্রভাব বিস্তার করছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি ছিল মূলত তার পাল্টা পরিকল্পনা, চীনকে ঠেকানোর কৌশল।
মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ সৈয়দ মাহমুদ আলী বলেন, ‘২০১৭ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র যত ধরণের প্রতিরক্ষা, সামরিক বা কূটনৈতিক দলিল প্রকাশ করেছে, তার সব কিছুর কেন্দ্রে কিন্তু আছে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সব কৌশলের একটাই লক্ষ্য, চীন যেন কোনোভাবেই মার্কিন স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করতে না পারে। আর চীনকে ঠেকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এসব কৌশলের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি।’
‘ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যত মিত্র দেশ আছে, এই ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে তাদেরকে একটি চীন-বিরোধী জোটে জড়ো করতে চায়। এই জোটের অনেক ধরনের লক্ষ্য আছে সামরিক, অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত এবং কূটনৈতিক। তবে সবকিছুর উপরে মূল লক্ষ্য একটাই চীন যেন কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের এক নম্বর ক্ষমতাধর দেশের অবস্থান থেকে বিচ্যুত করতে না পারে।’
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দুই বিশ্ব পরাশক্তির দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ কেন হঠাৎ এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল?বিশ্লেষকরা এর নানা কারণ উল্লেখ করছেন। এর একটি বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান। সেই সাথে সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশ যেভাবে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছে, সেটিকেও গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।
চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে বাংলাদেশ কেন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল, তা বোঝা কঠিন নয়। প্রথমত বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান। বঙ্গোপসাগরের একেবারে মুখে বাংলাদেশের অবস্থান। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার সংযোগস্থলে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে।’
‘তবে এর পাশাপাশি গত দুই দশকে বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে, তাতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। জনসংখ্যার বিচারে এটি বিশাল এক দেশ, বড় একটি বাজার। অনেকেই বাংলাদেশের এই বাজারে ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন, বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন।’
আহমেদ বলেন, ‘আর সম্প্রতি ভারত এবং মিয়ানমারের সাথে সমুদ্র সীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পর বাংলাদেশ যে বিশাল জলসীমা পেয়েছে, সেখানেও প্রচুর সম্পদ আছে। এসব কারণে বাংলাদেশ এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’
চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে উদ্বেগতবে এর পাশাপাশি বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশে চীনের প্রভাব যেভাবে বাড়ছিল, সেটি নিয়েও যথেষ্ট উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র এবং প্রতিবেশী দেশ ভারতে।
বাংলাদেশে চীন-মার্কিন দ্বন্দ্বের সবচেয়ে বড় একটি উদাহরণ সম্ভবত দেশটির একটি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্প।
চীন তার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ মহা-পরিকল্পনায় যে মেরিটাইম সিল্ক-রুট প্রকল্প নিয়েছে, তার অংশ হতে পারতো বাংলাদেশের সোনাদিয়ায় প্রস্তাবিত একটি গভীর সমুদ্র বন্দর।
সৈয়দ মাহমুদ আলী বলেন, ‘চীনকে দমন করার জন্য, চীন যেন বঙ্গোপসাগর দিয়ে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে ব্যবসা-বাণিজ্য না করতে পারে, সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ভারত সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে ঢুকতে না পারে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে চীনে গিয়ে সাহায্য চেয়েছিলেন কক্সবাজার উপকূলে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের জন্য। চীন বেশ আগ্রহের সাথেই এই প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছিল। ‘কিন্তু তখন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ভারত সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করে এই পরিকল্পনা বাদ দিতে। তারা উল্টা প্রস্তাব দেয় সোনাদিয়া হতে অল্প দূরত্বে মাতারবাড়িতে জাপানের সহায়তায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের জন্য। বাংলাদেশ ২০১৪ সালে শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তই নেয়।’
জাপানের কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তায় মাতারবাড়িতে এই গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কাজ এখন পুরো-দমে চলছে।
সৈয়দ মাহমুদ আলী বলেন, ‘বাংলাদেশ এই সাহায্য পাচ্ছে বাংলাদেশের কারণে নয়, মূল কারণ হচ্ছে চীন যেন বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, চীন যেন বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহারের সুযোগ বা অনুমতি না পায়।’
ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা নিয়ে হঠাৎ কেন সক্রিয় বাংলাদেশচীন-মার্কিন দ্বন্দ্বের মাঝখানে পড়ে গত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ সরকার ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে তাদের নীতি কী হবে, সে বিষয়ে কাজ করছে। এরকম একটি রূপরেখা ঘোষণা করা হবে এমন আভাস বেশ কিছুদিন থেকেই দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের আগে হঠাৎ করেই ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এই রূপরেখা ঘোষণা করে।
যে সময়ে বাংলাদেশ এই গুরুত্বপূর্ণ দলিলটি প্রকাশ করলো, তাকে অনেক বিশ্লেষকই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন।
বিশেষ করে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে নানা টানাপোড়ন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে যখন নতুন করে চাপ তৈরি হচ্ছে, তার সাথে সরকারের এই পদক্ষেপের সম্পর্ক দেখতে পাচ্ছেন অনেকে। তবে শেখ হাসিনার জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্র সফরের সফরের আগে ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা প্রকাশের বিষয়টিকে একেবারেই ‘কাকতালীয়’ বলে মনে করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমীন।
অধ্যাপক ইয়াসমীন বলেন, ‘তাড়াহুড়ো করে প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যান্য দেশকে খুশি করার জন্য বাংলাদেশ এই রূপরেখা প্রকাশ করেছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তার সাথে আমি সুস্পষ্টভাবে দ্বিমত পোষণ করি। বাংলাদেশ কিন্তু এই রূপরেখা নিয়ে কাজ করছে ২০২১ সাল হতে। এটা যখনই তৈরি হয়েছে, সরকার তখনই এটা প্রকাশ করেছে। আপনি বলতে পারেন যে প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই যে এটি প্রকাশ করা হলো, সেটা একটা কাকতালীয় ব্যাপার।’
ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলোর মধ্যে যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে সেটাই তুলে ধরা হয়েছে এই রূপরেখায়।
কোন দিকে ঝুঁকলো বাংলাদেশভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় এশিয়া-প্যাসিফিক এখন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এই অঞ্চলকে ঘিরেই এখন তীব্র হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বে দুই বৃহৎ শক্তিই বাংলাদেশকে তাদের পক্ষে চায়। বাংলাদেশ তাহলে ঘোষিত ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখায় শেষ পর্যন্ত কাদের পক্ষ নিলো চীন নাকি যুক্তরাষ্ট্র? রূপরেখায় তার কী ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে?
যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন পলিসি জার্নালে একটি নিবন্ধে একজন বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান দাবি করেছেন, এই রূপরেখায় বাংলাদেশ আসলে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজির প্রশ্নে পশ্চিমা শক্তির দিকে ঝুঁকেছে।
‘বাংলাদেশ টিল্টস টুওয়ার্ড দ্য ইউএস ইন দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক’ শিরোনামের এই নিবন্ধে মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ বহু দিন ধরে জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি পুরোপুরি গ্রহণ করার কাছাকাছি যাচ্ছে, যেটি কিনা চীনকে ঠেকাতে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের কৌশল।’
তবে এই মাইকেল কুগেলম্যানের এই বিশ্লেষণের জোরালো প্রতিবাদ এসেছে এরই মধ্যে বাংলাদেশের তরফ থেকে।
অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমীন বলেন, ‘মাইকেল কুগেলম্যান যেটা লিখেছেন, তার বিরুদ্ধে কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমি নিজেও কিন্তু এটা নিয়ে লিখেছি। বাংলাদেশ আসলে কোনো দেশের দিকেই ঝুঁকছে না। কারণ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তিই হচ্ছে সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বিদ্বেষ নয়।’
বাংলাদেশ যে এই রূপরেখায় মোটেই পশ্চিমা শক্তির দিকে যায়নি, তার প্রমাণ হিসেবে প্রফেসর ইয়াসমীন কয়েকটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করছেন।
‘প্রথমত, এই ডকুমেন্টের কোথাও কিন্তু বাংলাদেশ একবারও ‘ইন্দো-প্যাসিফিক রিজিওন’ কথাটি ব্যবহার করেনি। বাংলাদেশ এই পরিকল্পনা থেকে কাউকে বাদ দেয়া বা কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা এ ধরনের বিষয়গুলোকে এড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখানে ইনক্লুসিভিটির ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশ যে নিরপেক্ষতার নীতিতে বিশ্বাস করে সেই বার্তাটাই দিতে চেয়েছে।’
তবে সৈয়দ মাহমুদ আলী মনে করেন, বাংলাদেশ আসলে এক ভারসাম্যপূর্ণ নীতির মাধ্যমে দুই দিক রক্ষার কৌশল নিয়েছে এই রূপরেখায়।
‘ভারতীয় এবং মার্কিন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের রূপরেখা যে দলিলের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ইন্দো-প্যাসিফিক কথাটি বলা, নাম দেয়া, ব্যবহার করা, এবং ভেতরে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে একথা প্রচ্ছন্ন, বাংলাদেশ সামরিক দিক থেকে কোয়াড গোষ্ঠীর সাথে হাত মেলায়নি। কিন্তু কূটনৈতিকভাবে সেদিকেই তার ইচ্ছের বহিপ্রকাশ ঘটেছে। সেটি সরাসরি চীন বিরোধী নয়। কারণ বাংলাদেশ বারবার বলছে, তাদের রূপরেখা হচ্ছে ইনক্লুসিভ, অর্থাৎ সব রাষ্ট্রের স্থান আছে এখানে। কোনো রাষ্ট্রকেই বাদ দেয়া হবে না। বাংলাদেশ সবার দিকেই হাত বাড়াবার কথা বলেছে।’
‘একদিকে বলা যায়, এই দলিলটির যে নাম, এবং এতে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, সেদিক থেকে বাংলাদেশ চীন-বিরোধী গোষ্ঠীর সাথে একটা সহযোগিতার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দিয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ বাস্তবে অসামরিক, অর্থাৎ কোয়াড গোষ্ঠী যেভাবে চীনের ওপর সামরিক চাপ দিচ্ছে, বাংলাদেশ তার সাথে যোগ দেয়নি। সহযোগিতার কোনো কথা বলেনি। কাজেই বলা যায়, দুদিক রক্ষা করেই বাংলাদেশ ভারসাম্য রক্ষার এক নতুন উদ্যোগ নিয়েছে।’
কোনো দুর্বল রাষ্ট্রকে ঘিরে যখন বৃহৎ শক্তির দ্বন্দ্ব এবং প্রতিযোগিতা শুরু হয়, তখন সেটি একই সাথে দেশটির জন্য আশীর্বাদ এবং অভিশাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই প্রতিযোগিতার সুযোগে দরকষাকষি করে নিজের স্বার্থ আদায়ের সুযোগ যেমন থাকে, তেমনি বৃহৎ শক্তির টানা-হেঁচড়ার মাঝখানে পড়ে অনেক রাষ্ট্রে সংঘাত এবং বিপর্যয়ের নজিরও কম নয়।
সৈয়দ মাহমুদ আলী বলছেন, এই পরিস্থিতিতে নিজের স্বার্থ রক্ষা এবং সেই সাথে ভারসাম্য বজায় রাখা বাংলাদেশের সামনে বেশ বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশের নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশের কূটনীতি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে কিনা, সেই দূরদর্শিতা তাদের আছে কিনা, তার ওপরই নির্ভর করছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।
সূত্র : বিবিসি



RelatedNews

বাংলাদেশ

ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ৫০ জনের মৃত্যু

02/06/2023
বাংলাদেশ

ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত

02/06/2023
বাংলাদেশ

সরে যাচ্ছেন মিয়ানমারে জাতিসঙ্ঘের বিশেষ দূত

02/06/2023
বাংলাদেশ

এটা সাধারণ মানুষকে নিঃস্ব করার বাজেট : মির্জা ফখরুল

02/06/2023
বাংলাদেশ

পুরো বাজেটই গরিবের জন্য উপহার : অর্থমন্ত্রী

02/06/2023
বাংলাদেশ

জিডিপি-মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয় : সিপিডি

02/06/2023
Load More
Samatal News

সাপ্তাহিক সমতল
সম্পাদক: মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন।
নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল নাহিদ মিয়া (নাহিদ মিথুন)

৩২, মায়াকানন, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৪।
Email: samataldesk@gmail.com
Cell: +88-01711237484,
NewsHunt App: https://samatalnews.com/

Follow Us

  • About
  • Contact
  • Terms & Privacy
No Result
View All Result
  • Home
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • প্রতারণা ও দুর্নীতি
  • মতামত
  • সাংবাদিকতা
  • আমার অধিকার
  • সকল গণমাধ্যম
  • App
  • সংবাদ দিন

© 2021 NewsHunt

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Create New Account!

Fill the forms below to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
  • Total: 85.9K
  • 67.4KSHARES
  • 17.9KTWEETS
  • Viber
  • WhatsApp
  • 652Email
  • Share
  • SHARES
  • TWEETS
  • +1S
  • PINS
  • SHARES
  • Digg
  • Del
  • StumbleUpon
  • Tumblr
  • VKontakte
  • Print
  • Email
  • Flattr
  • Reddit
  • Buffer
  • Love This
  • Weibo
  • Pocket
  • Xing
  • Odnoklassniki
  • ManageWP.org
  • WhatsApp
  • Meneame
  • Blogger
  • Amazon
  • Yahoo Mail
  • Gmail
  • AOL
  • Newsvine
  • HackerNews
  • Evernote
  • MySpace
  • Mail.ru
  • Viadeo
  • Line
  • Flipboard
  • Comments
  • Yummly
  • SMS
  • Viber
  • Telegram
  • JOIN US
  • Skype
  • Messenger
  • Kakao
  • LiveJournal
  • Yammer
  • Edgar
  • Fintel
  • Mix
  • Instapaper

Add New Playlist

Send this to a friend