দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে অন্য সব আলোচনাকে ছাপিয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে মিয়ানমারের রক্তঝরা রাজনৈতিক সঙ্কট ও চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী মনোভাব। মঙ্গলবার থেকে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় এই সম্মেলন শুরু হয়েছে।
১০ সদস্যের এই আঞ্চলিক জোটের সহ-নেতাদের ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেন, আসিয়ান ‘একমত হয়েছে যে- তারা অন্য কোনো জোটের প্রতিনিধির’ দায়িত্ব পালন করবে না এবং তাদেরকে ‘অবশ্যই শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিজ নিজ জাহাজের কাণ্ডারি হতে হবে’।
মিয়ানমারের সঙ্কট মোকাবেলায় আসিয়ান বেশ কিছু উদ্যোগ নিলেও সেগুলো বাধার মুখে পড়েছে। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সু চি-র সরকারকে সামরিক বাহিনী উৎখাত করার পর থেকে দেশটি বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অভ্যুত্থানের মাত্র কয়েক মাস পর দেয়া আসিয়ানের ৫ দফা ‘সুপারিশ’ মেনে নিতে রাজি হয় সামরিক জান্তা। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল শিগগির সহিংসতা নিরসন, জান্তা ও তার প্রতিপক্ষদের মধ্যে শান্তি আলোচনার আয়োজন ও মানবিক সহায়তা গ্রহণের পথ সুগম করা।
তবে মিয়ানমারের জান্তা আসিয়ানের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করেনি। বরং তারা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের বিক্ষোভকে সহিংস প্রক্রিয়ায় দমন করেছে এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের সহায়তায় গঠিত একাধিক সশস্ত্র বিরোধী পক্ষের ওপর প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালিয়েছে। এই গোষ্ঠীগুলো বেশ কয়েক দশক ধরে অধিক স্বশাসন পাওয়ার জন্য লড়ছিল।
এই স্থবিরতার কারণে কয়েকটি কূটনৈতিক মহলে আসিয়ানের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং এটি অপ্রাসঙ্গিক সংগঠনের তকমা পেয়েছে, যা সদস্যদের মধ্যে কৌশলগত বিভেদ সৃষ্টি করেছে। জান্তাকে যেকোনো ধরনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে জুলাই মাসে থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা জান্তার নেতাদের সাথে দ্বিপাক্ষীয় আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
তবে নেতারা মঙ্গলবার মিয়ানমারকে ২০২৬ সালে আসিয়ানের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে ফিলিপাইনকে মনোনয়ন দিয়েছে।