রাশিয়ার থেকে সুখোই-৩৫ ফাইটার জেট কেনার চুক্তি ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
নানা ধরনের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবরোধের মধ্যে থাকা ইরানের বিমানবহর বেশ পুরাতন। অবরোধের কারণে নতুন যুদ্ধবিমান তো বটেই পুরাতন বিমানের জন্য নতুন যন্ত্রপাতি কেনাটাও ইরানের জন্য বেশ কষ্টকর হয়ে পড়েছিল।
অন্যদিকে রাশিয়াও ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর অবরোধের মুখে পড়েছে। ফলে এমন চুক্তি ইরানের জন্য অবরোধ এড়িয়ে সামরিক শক্তি আরো বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ হিসেবে হাজির হয়েছে। রাশিয়াও পাশ্চাত্যের দেশগুলোকে এড়িয়ে খুঁজে নিতে পারছে সামরিক ভাণ্ডারের নতুন বাজার।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ এ বিষয়ে ইরান সরকারের একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়া জানিয়েছে যে তারা বিমানগুলো বিক্রির জন্য প্রস্তুত।’
জাতিসঙ্ঘে ২২৩১ রেজল্যুশন অনুযায়ী অস্ত্র কেনায় ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু ওই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের অক্টোবরেই।
কেবল সামরিক নয়, বিভিন্ন খাতেই গত বছর থেকেই রাশিয়ার সাথে বেশ ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তুলেছে ইরান।
ইরান রাশিয়াকে শাহেদ-১৩৬ ‘কামিকাৎজে’ ড্রোন সরবরাহ করেছে। গত বছর ইউক্রেন অভিযোগ করে যে এসব ড্রোন ইউক্রেনে বেসামরিক স্থাপনায় হামলার কাজে রাশিয়া ব্যবহার করছে। তবে ইরান এমন অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।
ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে বাড়তে থাকা সামরিক সহযোগিতা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি গত ডিসেম্বরেই জানিয়েছে, রাশিয়া ইরানের কাছে ফাইটার জেট বিক্রি করতে পারে।
তিনি জানিয়েছিলেন, ইরানের পাইলটরা সুখোই বিমান উড্ডয়নের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এই বিমান পেলে ইরান তার প্রতিবেশীদের তুলনায় আকাশ যুদ্ধে তুলনামূলক শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছিলেন কিরবি।
এখন ইরানের বিমানবহরে যে মিগ ও সুখোই বিমানগুলো রয়েছে, তার বেশিরভাগই সোভিয়েত আমলের। এফ-সেভেনসহ কিছু চীনা বিমান ও ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের আগের কিছু মার্কিন যুদ্ধবিমানও (এফ-ফোর ও এফ-ফাইভ) ইরানের কাছে রয়েছে৷
পরমাণু চুক্তি থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একতরফা যুক্তরাষ্ট্রের নাম সরিয়ে নেয়ার পর ২০১৯ সালে আবার ইরানের ওপর অবরোধ আরোপ করতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র : ডয়চে ভেলে