সমতল ডেস্কঃ ভ্রাম্যমাণ আদালতের আদায়কৃত অর্থদণ্ড সরকারি কোষাগারে দ্রুত জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এই অর্থ অনেক সময় কোষাগারে জমা হচ্ছে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এক ধরনের অনীহা দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এখন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক আদায়কৃত অর্থদণ্ডের টাকা অবিলম্বে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
পরিপত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অর্থদণ্ড ও জরিমানা বাবদ আদায়কৃত অর্থ ‘সরকারি পাওনা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, ইদানীং লক্ষ করা যাচ্ছে যে, কোন কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর, দফতর, সংস্থার অধীনে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অর্থদণ্ড ও জরিমানা বাবদ আদায়কৃত অর্থ যথাযথভাবে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হচ্ছে না কিংবা বিলম্বে জমা দেয়া হচ্ছে, যা আর্থিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী।
‘মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯’-এর আওতায় আদায়কৃত অর্থদণ্ড ও অন্যান্য অর্থ ‘এ-চালান’ পদ্ধতিতে অন-লাইনে কিংবা যেকোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের যেকোন শাখায় নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক কোডে জমা দিতে হবে।
পরিপত্রে বলা হয়, জরিমানা হিসেবে আদায়কৃত অর্থ ১৪৩১১০১ নং কোডে, বাজেয়াপ্তকরণ হিসেবে আদায়কৃত অর্থ ১৪৩১১০৩ নং কোডে এবং বাজেয়াপ্ত দ্রব্য বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ ১৪৩১১০৪ নং কোডে জমা দিতে হবে।
বাজেয়াপ্ত দ্রব্য নিলামে বিক্রির ক্ষেত্রে নিলাম ক্রেতার কাছ থেকে প্রযোজ্য হারে আদায়কৃত আয়কর ১১১১১০১ নং কোডে এবং মূল্য সংযোজন কর ১১৪১১০১ নং কোডে ‘এ-চালান’ পদ্ধতিতে জমা দিতে হবে।
পরিপত্রে আরো বলা হয়, সরকারের রাজস্ব ও বিভিন্ন সেবা ফি বাবদ সরকারি খাতে অর্থ জমা দেয়ার বিদ্যমান পদ্ধতি সহজীকরণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ‘অটোমেটেড চালান সিস্টেম’ (এ-চালান) চালু করেছে সরকার। অর্থ বিভাগ কর্তৃক চালুকৃত এ পদ্ধতি ব্যবহার করে অন-লাইনে কিংবা যেকোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের যেকোনো শাখায় (ওভার দ্য কাউন্টার) সরকারি রাজস্ব বাবদ প্রাপ্ত অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি কোষাগারে জমা করা যায়।
হাওর, দ্বীপ ও চরঘোষিত উপজেলার কর্মচারীরা মাসিক ভাতা পাবে : এ দিকে দেশের হাওর, দ্বীপ ও চর হিসেবে ঘোষিত ১৬টি উপজেলায় কর্মরত স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য অতিরিক্ত মাসিক ভাতা প্রদান করবে সরকার। ‘জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫’-এ উল্লিখিত প্রথম থেকে ২০টি গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গ্রেড ভিত্তিতে এ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে জারিকৃত এ-সংক্রান্ত অপর এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ২৬ জানুয়ারি থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর বলে বিবেচিত হবে। তবে হাওর, দ্বীপ ও চর হিসেবে ঘোষিত ১৬টি উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দারা নিজ উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন এ ভাতা প্রাপ্য হবেন না।
গ্রেড ভিত্তিতে মাসিক ভাতার হার হচ্ছেÑ প্রথম থেকে সপ্তম গ্রেড পর্যন্ত ৫ হাজার টাকা; অষ্টম গ্রেড ৪ হাজার ৬০০ টাকা; নবম গ্রেড ৪ হাজার ৪০০ টাকা; দশম গ্রেড ৩ হাজার ২০০ টাকা; একাদশ গ্রেড ২ হাজার ৫০০ টাকা; দ্বাদশ গ্রেড ২ হাজার ২৬০ টাকা; ত্রয়োদশ গ্রেড ২ হাজার ২০০ টাকা; চতুর্দশ গ্রেড ২ হাজার ৪০ টাকা; পঞ্চদশ গ্রেড ১ হাজার ৯৪০ টাকা; ষোড়শ গ্রেড ১ হাজার ৮৬০ টাকা; সপ্তদশ গ্রেড ১ হাজার ৮০০ টাকা; অষ্টাদশ গ্রেড ১ হাজার ৭৬০ টাকা; ঊনবিংশ গ্রেড ১ হাজার ৭০০ টাকা এবং বিশতম গ্রেডের কর্মচারীরা ১ হাজার ৬৫০ টাকা হারে ভাতা পাবেন।
জানা যায়, হাওর, দ্বীপ ও চর হিসেবে সরকার ঘোষিত ১৬টি উপজেলা হচ্ছে ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন, সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া, হাতিয়া, চৌহালি, রৌমারি, চর রাজীবপুর, রাঙ্গাবালি, মনপুরা, ধর্মপাশা, শাল্লা, দোয়ারাবাজার, আজমীরিগঞ্জ ও খালিয়াজুরি।