সমতল ডেস্কঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্ণ হলো আজ। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তিটি সই হয়। সর্বমোট চার দফায় শান্তি বাহিনীর সদস্যরা মোট ৮৭৪টি অস্ত্র জমা দেয় এবং শান্তি বাহিনীর ১ হাজার ৯৪৬ জন সদস্য সরকারের নিকট আত্মসমর্পণ করে যাদের মধ্যে ৭১৫ জন সদস্যকে পুলিশ বাহিনীতে চাকুরি প্রদান করা হয়।
গেল ২৫ বছরে চুক্তির অনেক শর্ত বাস্তবায়িত হলেও বাকিও রয়ে গেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেমন স্থানীয় ভোটার তালিকা সংক্রান্ত সমস্যা ও বিভিন্ন জটিলতার কারণে মৌলিক বিষয়ের মধ্যে ভূমি সমস্যার নিরসন না হওয়া, আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন না হওয়া, আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদের নিকট বিভাগ হস্তান্তর না হওয়া, পার্বত্য অঞ্চলে আভ্যন্তরীন উদ্বাস্তু পুনর্বাসনসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু বিষয় এখনো অবাস্তবায়িত রয়েছে। সাধারণ মানুষ চায় পার্বত্য শান্তি চুক্তি নিয়ে সব ধরনের জটিলতা কেটে যাক।
চুক্তি নিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের সুশীল সমাজের নেতারা বলছেন, শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়াতে এখানকার মানুষ এখনও কোনো সুফল পাচ্ছেন না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, চুক্তি অনুযায়ী সকল কাজ সম্পন্ন হয়নি। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊসেশিং বলেছেন, শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে উভয় পক্ষেরই সমঝোতার মনোভাব থাকতে হবে। শুধু আলোচনার প্রয়োজনে আলোচনা করলে কোনো লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে বলে জানালেন বান্দরবান পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীরপ্রতীক গণমাধ্যমকে বলেন, শান্তিচুক্তির ফলে পাহাড়ে শান্তি ফিরেছে সত্যি। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি পক্ষ লাভবান হয়েছে, অপর পক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অসম পরিবেশের কারণে শান্তির পূর্ণাঙ্গ সুবাতাস পাচ্ছেন না ঐ অঞ্চলের মানুষ। একই সাথে পাহাড়ের বাঙালীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকত্ব সমমানে মূল্যায়ন করা এবং মিয়ানমার সংলগ্ন পাহাড় এলাকায় সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর আনাগোনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক।