আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) শহরের প্রাণকেন্দ্র পাবনা প্রেসক্লাব এর পাসের রানা শপিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত এই ইভিনিং টাচ আবাসিক হোটেল-১-এ অভিযান চালিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। এসময় অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার সময় ৫ জন মেয়ে ও ৫ জন ছেলেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি ডিবি পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবনা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, সেখানে অনৈতিক কর্মকান্ড হয় -এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। এসময় অনৈতিক কাজের সময় ৫ জন মেয়ে ও ৫ জন ছেলে মোট ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকৃতরা সবাই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। তাদেরকে পাবনা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযানের সময় হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিমতে জানা যায় যে দীর্ঘদিন ধরে পাবনা প্রেসক্লাবের পাশের এই হোটেলে যেভাবে পুরুষ-মহিলা যাতায়াত করে যেন এটি একটি পতিতা পল্লি। এই হোটেলে ঘণ্টা প্রতি উচ্চমূল্যে কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয় অনৈতিক ও অবৈধ দৈহিক মেলা মেশার জন্য। ঘন্টা প্রতি ৫০০ টাকা থেকে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয় এই হোটেলে। এতে খুব সহজেই অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণ-তরুণীরা। এছাড়াও পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকরা ও বহিরাগতরাও সহজেই অসামাজিক কাজ করার জন্য এখানে আসছে।
অভিযান নিয়ে পাবনা প্রেস ক্লাব গলির ও আশপাশের ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিশ্বাস করুন- এই অভিযান নিয়ে এখানকার ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ খুশি হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এর আগে অনেকবার এখানে প্রশাসনকে ঢুকতে দেখেছি, কিন্তু কাউকে আটক না করেই চলে যেতে দেখিছি। এইবার প্রথম কাউকে আটক করা হলো। এই জন্য আমাদের পুলিশ সুপারকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
পাবনা প্রেস ক্লাব গলির আরেক ব্যাবসায়ি বলেন ইভিনিং টার্চ ১ এর ৩য় ও ৪র্থ তলা মিডিয়া পল্লি ও পাশের ভবন প্রেস ক্লাব হওয়ায় আমরা সাধারন মানুষ প্রতিবাদও করতে পারি না। কারন সাংবাদিকগণ যখন দেখেও না দেখার ভান করে, তখন আমরা বুঝতে পারি তারাও ম্যানেজ। তা না হলে এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে তারা নিউজ করেন না কেন? এজন্য সাধারন ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
পাবনা প্রেসক্লাব গলির আরেক ব্যবসায়ী বলেন, বাঘা বাঘা সাংবাদিকদের সামনে দিয়ে এই হোটেলে এসে উঠতি বয়সের স্থানীয় ও বহিরাগত ছেলে-মেয়েরাও উচ্চ মুল্যে রুম ভাড়া নেয় এবং বছরের পর বছর এ নিয়ে গনমাধ্যমে কোনও সংবাদও আসেনা এবং এসব অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে কোন সাংবাদিক নিউজ পর্যন্ত করেনা। আল্লাহ জানেন, সাংবাদিকরা এই ব্যবসায় জড়িত রয়েছে কিনা। একটি জেলার প্রেসক্লাবের সামনে এমন অনৈতিক কাজ চললেও তারা কেন চুপ থাকে তা পাবনাবাসীর মনে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।
এর আগেও এই হোটেলটির আরেকটি শাখা শহরের মুনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার ইভিনিং টাচ আবাসিক হোটেল-২-এ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েক জোড়া পুরুষ-মহিলা আটক করেছিল ডিবি পুলিশ। অভিযানের সময় বন্ধ হলেও মালিকপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় কয়েকদিন পরেই আবারও এসব হোটেলে অনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হয়।